লাইফস্টাইল: প্রত্যেককেই বিশ্বায়নের যুগে নিজের ক্যারিয়ার নিয়েই লড়াই করতে হয়। ২০২৩ সালে এসে যেকোনো একটা বিষয়ের ওপর দক্ষ হলে চলবে না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য স্কিল আপনার চাকরির সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করে দেবে।
অনেকেই হয়তো থেমে আছেন, যেখানে চাইলেই অনেক কিছুই করা যায়। আপনার লক্ষ্য অর্জিত হলে আর্থিক সুবিধা, ভালো লাইফস্টাইল এবং নতুন পদবী অর্জন করতে পারবেন। কিন্তু সেজন্যে অনেক বেশি কর্মঠ হতে হবে।
যুগ এখন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে আপনাকে অবশ্যই একাধিক স্কিল অর্জন করতে হবে। আজ থাকছে ক্যারিয়ারে উন্নতি করার কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা।
যদি ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে চান তবে মেনে চলুন এই ১০ উপায়-
১) ক্যারিয়ার পরিকল্পনা:
ক্যারিয়ার গঠন এবং তার উন্নতির জন্য প্রথমত পরিকল্পনা করতে হবে। যা জীবনের লক্ষ্য বুঝতে এবং সেখানে পৌঁছাতে সহযোগিতা করবে। নিজের চাওয়াগুলো খুঁজে বের করুন এবং নিজেকে আগামী দিনগুলোতে কোথায় দেখতে চান। ক্যারিয়ারের বর্তমান এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করুন। যা-ই করুন না কেন কাজ যেন মানানসই হয় এবং লক্ষ্য পূরণ করে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
২) সিভি আপডেট করুন:
সাধারণত অধিকাংশরাই চাকরির আবেদনের আগে তাড়াহুড়ো করে সিভি আপডেট করি। ফলে অনেক সময় সিভিতে অনেক ভুল ধরা পড়ে ৷ এই ভুল এড়াতে আগে থেকেই সিভি আপডেট করে রাখতে পারেন। নতুন চাকরি, স্কিল বা ইন্টার্নশিপ পাওয়ার সাথে সাথে সিভিটা আপডেট করে রাখুন।
৩) ইন্টারভিউ দক্ষতা বাড়ান:
চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশলসমূহ জানা থাকলে আপনার আত্মবিশ্বাস, মনোবল আপনার সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রতিটা সাক্ষাৎকারে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হলেও হাল ছাড়বেন না।
নতুন করে শুরু করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি কী চান। সেই অনুযায়ী লক্ষ্যে এগিয়ে যান, তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। শুধুমাত্র কাজে ভালো করেই আপনি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না। কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয়ে খোঁজ খবর রাখতে হবে ক্যারিয়ারের অগ্রগতির জন্য।
৪) নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি করুন:
ক্যারিয়ারের অগ্রগতির জন্য নেটওয়ার্কিং-এর অবদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে আপনার ক্যারিয়ার গড়ার নতুন সুযোগ বাড়বে। নেটওয়ার্কিং-এর মধ্যে অনলাইন নেটওয়ার্কিং অন্যতম, এজন্য অনলাইন প্রফাইলটি উন্নত করুন যেন অনলাইন নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা না হয়।
৫) দক্ষতা বাড়ান:
নিজেকে উন্নত করার মাধ্যমে ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে পারবেন। পারফর্মেন্স স্কিলস বাড়ানোর মাধ্যমে আপনার কাজের দক্ষতা বাড়াতে পারেন। বই পড়া, নিজের কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত অনলাইন কোনো কোর্স করা, যেকোনো বিষয়ে প্রয়োজনমাফিক যোগ্যতা বাড়ানো বা প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ইত্যাদি ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করবে।
৬) নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ:
চ্যালেঞ্জের সাথে দ্বায়িত্বশীল হয়ে নতুন কাজ করুন। ফলে সব পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। এতে দায়িত্বশীলতা এবং সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে পারার যোগ্যতাও প্রকাশ পাবে। ক্যারিয়ার অগ্রসর করতে যতটা সম্ভব নতুন নতুন কাজ করুন। পরবর্তীতে এই কাজগুলো ক্যারিয়ারের অগ্রগতিতে সাহায্য করবে।
৭) আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করুন:
কাজে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসীও হতে হবে। দ্বিধা কমিয়ে নিজের কাজের দক্ষতা এবং ক্ষমতা নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার সময় এখনই। আত্মবিশ্বাসী মানুষেরা ঝুঁকি নিতে পছন্দ করে, আপনিও তাদের একজন হয়ে উঠুন। সেইসাথে আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এবং যোগাযোগ স্কিলস বৃদ্ধি করে তুলুন। জড়তা না রেখে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলুন।
৮) সর্বদা ইতিবাচক থাকুন:
ইতিবাচক মানুষের সাথে সবাই কাজ করতে পছন্দ করে। সহকর্মীদের পছন্দের একজন হয়ে উঠলে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন। সহকর্মী বা বসকে সাহায্য করুন যাতে বোঝা যায় যে দলনেতা হওয়ার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এতে কাজের প্রতি আগ্রহও প্রকাশ পাবে।
৯) নিজের কাজ ও ব্যক্তিজীবনের সামঞ্জস্যতা রাখুন:
মাঝে মাঝে কাজের প্রতি এতই ডুবে যান যে এর বাইরেও একটা জীবন রয়েছে, তার কথা ভুলে যাওয়া হয়। কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি ব্যাপার। ভারসাম্য তৈরির উদ্দেশ্য হলো, একজন ব্যক্তি যাতে নিজেকে যথেষ্ট সময় দিতে পারেন। আবার তার পাশাপাশি কর্মজীবনও যেন তাৎপর্যপূর্ণ হয়। ফলে বাড়তি চাপ মোকাবিলা করতে হবে না।
১০) দক্ষ নেতা হোন
একজন আদর্শ নেতার গুণাবলি কী কী? যেমন মেন্টর চেয়েছিলেন, তেমন মেন্টর কি পেয়েছেন? নিজে যদি তেমন মেন্টর পেয়ে থাকেন, তাহলে তো খুবই ভালো। আর যদি না পান? তাহলে নিজেই সেরকম লিডার হয়ে উঠুন। এমন লিডার হোন যাকে নিজের আদর্শ মেনে চলতেন।
এবি/এইচএন