ধূমপানে অনেক ক্ষতি। এতে করে ফুসফুস বা হৃদপিণ্ডের ক্ষতি হয়। ধূমপান মস্তিষ্কেও বাজে প্রভাব ফেলে। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও এ অভ্যাস পরিত্যাগ কঠিন।
এদিকে ধূমপানের কুফল সম্পর্কে গবেষণা বলছে, ধূমপান শুধু ফুসফুস বা হৃদপিণ্ডের ক্ষতি করে না, এটি বুদ্ধিও কমিয়ে দেয়।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের একটি দল সম্প্রতি ধূমপায়ীদের নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষার ফল জানাচ্ছে, সিগারেট নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ব্রেনে। দলটি ৩২ হাজার ৯৪ জন সিগারেট আসক্ত ব্যক্তির ওপর এই পরীক্ষা চালায়। জেনেটিক্যালিও ধূমপান যে প্রভাব ফেলছে, তাও এই গবেষণায় উঠে এসেছে।
বায়োলজিক্যাল সাইক্রাট্রি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে ‘গ্লোবাল ওপেন সায়েন্স’ দাবি করা হয়েছে, ধূমপানে বুদ্ধি কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। আর এই যুক্তির সপক্ষে প্রমাণও মিলেছে। শুধু তাই নয়, সিগারেটে থাকা নিকোটিনের প্রভাবে ছোট হয়ে যায় আমাদের ব্রেনের আকৃতিও।
একই সঙ্গে দ্বিগুণ হারে নষ্ট হয় ব্রেন সেল। এমনকি শুধু ফুসফুস বা হার্টেরই নয়, সিগারেটের কারণে মারাত্মক বিপদের মুখে পড়ে মস্তিষ্কও।
এই গবেষণায় আরো জানা গেছে, ধূমপানের কারণে ব্রেনের যে ক্ষতি হয় তা স্থায়ী। এই ক্ষতি কোনোভাবেই আর ঠিক করা সম্ভব নয়। একবার মস্তিষ্ক সংকুচিত হয়ে গেলে, ব্রেনের কোষ নষ্ট হতে শুরু করলে তা আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এমনকি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিলেও ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব হয় না।
এই গবেষণার অন্যতম গবেষক সেন্ট লুইস এই প্রসঙ্গে জানান, বয়স বাড়তেই ব্রেনের কোষ একটু একটু করে নষ্ট হতে শুরু করে। একইসঙ্গে সিগারেট খেলে সেই কাজ অসময়েই শুরু হয়ে যায়। ফলে চিন্তা-ভাবনায় এক বিশাল প্রভাব পড়ে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ধূমপায়ীদের মানসিক স্থিতি নষ্ট হচ্ছে আসক্তির কারণে। মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাদের পেশা ও জীবনযাত্রাও। বাড়ছে অ্যালজাইমার্সের ঝুঁকি।
তবে প্রত্যক্ষ ধূমপানের কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার প্রমাণ মিললেও পরোক্ষ ধূমপানেও এমন গভীর ক্ষতির ঝুঁকি আছে কিনা, তা এখনো জানা যায়নি। যদিও সারাদিন একজন মানুষ কতগুলো সিগারেট খাচ্ছেন তার ওপরেও মস্তিষ্কের ক্ষতির মাত্রা নির্ভর করে। এমনকি ধূমপান ছেড়ে দিলেও ক্ষতির ঝুঁকি থেকেই যায়।
সূত্র: ইউএস নিউজ এন্ড ওয়ার্ল্ড রেকর্ড/ সায়েন্স ডেইলি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ