এক লিটার কোকা-কোলা বা কোক পানে মানুষের আয়ু ১২ মিনিট করে কমে যায়। আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই উদ্বেগজনক তথ্যটি জানিয়েছেন। তাদের গবেষণার বিষয় ছিল, প্রক্রিয়াজাত খাবার মানব স্বাস্থ্যের জন্য কতটা বিপজ্জনক, তা খুঁজে বের করা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা যেসব আল্ট্রা-প্রসেসড ফুড (ইউপিএফ) খাচ্ছি, সেসব খাবারে কৃত্রিম রং ও ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, ইমালসিফায়ার যোগ করা হয়। তাই প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে বিপদ অবধারিত।
গবেষকরা বলেছেন, একটি হটডগ ৩৬ মিনিট আয়ু কমাতে পারে। হটডগের সঙ্গে কোক খেলে আরো ১২ মিনিট আয়ু ক্ষয় হবে। ব্রেকফাস্ট স্যান্ডউইচ আর ডিম খেলেও ১৩ মিনিট হারে আয়ু কমবে। চিজবার্গার খেলে আয়ু নয় মিনিট কমবে। আবার মাছ খেলে ২৮ থেকে ৩২ মিনিট আয়ু বাড়বে।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ড. অলিভার জুলিয়েট। তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে বিষয়টি একদম পরিষ্কার, সেটি হলো স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে হলে অবশ্যই এ গ্রহবাসীকে তাদের খাদ্যাভ্যাস পাল্টাতে হবে।’
গবেষকরা জানান, পিত্জা, ম্যাকরনি, চিজ, হটডগ আর কোক আয়ু কমাবেই। শূকরের মাংস খেলেও আয়ু কমে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল (বিএমজে) এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, বেশি মাত্রায় ইউপিএফ খাবার খেলে হৃদরোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এসব খাবার মানসিক রোগও বাড়ায় এবং কমপক্ষে ১২ শতাংশ টাই টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকে।
গবেষকরা বলেছেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হচ্ছে ফল, শর্করা ও শাক-সবজি।
উল্লেখ্য, ইমালসিফায়ার খাবারের জলীয় উপাদান ও তেলকে পরস্পর থেকে আলাদা হওয়ার প্রবণতা রোধ করে। সাধারণত মেয়োনিজ, আইসক্রিম, চকোলেট, চিনাবাদাম, মাখন, কুকিজ, ক্রিমি সস, মার্জারিন এবং বেকড পণ্যগুলোর মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোতে ইমালসিফায়ার যোগ করা হয়। ইমালসিফায়ার এই খাবারগুলোকে একটি মসৃণ টেক্সচার দেয় এবং তাদের আয়ুষ্কাল বাড়ায়। এটি প্রসাধনী, লোশন এবং নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। খাবারের মতো এসব জিনিসেরও স্টোরেজ আয়ু বাড়াতে ইমালসিফায়ার ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত শূকরের হাড়, ডিম ও সবজি থেকে উৎপন্ন হয়। কিছু ইমালসিফায়ার শেওলা থেকে তৈরি হয়।
সূত্র : মেট্রো.কো.ইউকে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ