লাইফস্টাইল ডেস্ক: গরমে এক গ্লাস লেবু পানি সব ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে। অনেকে তো গরমে দিনে ৩-৪ বারও লেবু পানি পান করেন। এই পানীয় শুধু তাপ থেকে মুক্তি দেয় না, বরং সতেজও রাখে। ডিটক্সিফিকেশন, হাইড্রেশন এবং ইমিউন-বুস্টিং বৈশিষ্ট্য সহ অগণিত স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য বিখ্যাত লেবুপানি দীর্ঘকাল ধরে সামগ্রিক সুস্থতায় অবদান রেখে আসছে।
লেবুপানির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলোর মধ্যে একটি হলো শরীরকে হাইড্রেট এবং পরিষ্কার করার ক্ষমতা। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ লেবুর রস শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে, যার ফলে ত্বক পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর হয়। পানীয়টির হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্যের জন্য গায়ের রং আরও উজ্জ্বল, কোমল এবং পুনরুজ্জীবিত হয়।
ভিটামিন সি ছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ফাইবার আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত এই পানীয় পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
তীব্র গরমে লেবুপানির উপকারিতা:
১) শরীরের ফ্যাট কমাতে লেবুপানি:
আমাদের অনেকের কাছেই পরিচিত একটি পদ্ধতি হচ্ছে— সকালে লেবুপানি খাওয়া। আর এর সঙ্গে অনেকে মধু মিশিয়েও খেয়ে থাকেন। নিয়মিত সকালে কুসুম কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এটি শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। আর এতে চিনি বা মিষ্টি কিছু মিশিয়ে খাওয়া যাবে না। এক কাপ পানিতে অর্ধেক পরিমাণ লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন।
২) শরীরকে হাইড্রেট থাকতে সহায়তা করে:
নিয়মিত লেবুপানি খেলে তা শরীরকে হাইড্রেট থাকতে সহায়তা করে। আর গবেষণা বলছে, হাইড্রেশন শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শরীরে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তা শরীরের ফ্যাট দূর করে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৩) বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে:
লেবুপানি আপনার বিপাকক্রিয়াকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। ফলে শরীরের ওজন কমতে পারে আরও দ্রুত। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণে পনি পান করার ফলে বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি পেয়ে তা ওজন কমাতে সহায়তা করে। আর এ ক্ষেত্রে আপনি বেছে নিতে পারেন লেবুপানিকেও।
৪) ক্ষুধা কমাতে সহায়তা করে:
লেবুপানি খেলে তা আপনার ক্ষুধা কমাতে সহায়তা করে। খাবার খাওয়ার আগে লেবুপানি খেলে তা আপনাকে কম খাবার খেতে সহায়তা করবে।
২০০৮ সালে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার খাওয়ার আগে পানি পান করলে তা শরীরে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত কম ক্যালোরি প্রবেশ করাতে পারে।
৫) ত্বক উজ্জ্বল করে:
লেবুপানিতে থাকা ভিটামিন সি প্রাকৃতিক ত্বক উজ্জ্বলকারী এবং বর্ণ বর্ধক হিসাবে কাজ করে। এই সাইট্রাস-মিশ্রিত পানীয় নিয়মিত খেলে ত্বকের কালো দাগ এবং পিগমেন্টেশন ধীরে ধীরে কমে যাবে। লেবুর রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেল ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করে। এর ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায়। লেবুপানির প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটিং বৈশিষ্ট্য ত্বক মসৃণ করে। যে কারণে ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত এবং পুনরুজ্জীবিত দেখায়।
৬) ব্রণ এবং দাগ দূর করে:
লেবুপানি খেলে ত্বকের যেসব পরিবর্তন হয় তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ব্রণ এবং দাগ কমানো। লেবুর রসে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যাস্ট্রিনজেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই এবং অতিরিক্ত তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন লেবুপািপিান করলে ত্বকের স্বচ্ছতা এবং উল্লেখযোগ্য উন্নতি নিজেই লক্ষ্য করবেন।
৭) ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখে:
ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা ছাড়াও লেবুপানি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-এজিং হিসেবে কাজ করে। যা বলিরেখা এবং বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে, ত্বকে দৃঢ়তা এবং স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। নিয়মিত লেবুপানি খেলে ত্বক দৃঢ়, মসৃণ এবং তারুণ্যদীপ্ত দেখায়। লেবুর রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দূষণের ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়, যা ত্বকের তারুণ্যকে দীর্ঘকাল ধরে রাখতে সাহায্য করে। তথ্যসূত্র: ইটদিস ডটকম
এবি/এইচএন