চিলির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় সাগরে একটি বিশাল হাম্পব্যাক তিমি এক কায়াকারকে গিলে নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আবার অক্ষত অবস্থায় মুখ থেকে ছুড়ে দিয়েছে। ভয়াবহ এ ঘটনাটি ধরা পড়েছে তার বাবার নৌকায় থাকা ক্যামেরায়। খবর সিএনএনের।
গত শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) চিলির মেগাল্লান প্রণালীর সান এলসিদ্রো লাইটহাউজের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
তবে ২৪ বছর বয়সী এই যুবকের কোনো ধরনের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু একটি মুহূর্তের জন্য তার মনে হয়েছিল, তিনি মারা যাচ্ছেন।
ওই কায়াকারের নাম আদ্রিয়ান সিমানকাস। তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, শনিবার তিনি তার বাবার সঙ্গে কায়াকিং করতে পুন্তা আরেনাস শহরের উপকূলীয় সাগরে গিয়েছিলেন।
সাগরে কায়াকিং করার সময় একটি তিমি ভেসে ওঠে আদ্রিয়ানকে মুখের মধ্যে পুরে নেয় আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ছুড়ে বের করে দেয়।
তিনি বলেন, আমি এমন অনুভব করছিলাম যেন আমাকে উপরে তোলা হচ্ছে, কিন্তু এটি পরিষ্কারভাবে একটি ঢেউ থেকে অনেক শক্তিশালী ছিল। যখন আমি পেছনে তাকালাম, নীল ও সাদা কিছু একটা আমার মুখের খুব কাছ দিয়ে চলে যাচ্ছে অনুভব করলাম। কী হচ্ছে আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না। এরপর আমি নিচে চলে গেলাম আর ভাবলাম আমাকে গিলে ফেলা হয়েছে।
এই আতঙ্কজনক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আদ্রিয়ান ধরে নিয়েছিলেন, তার মৃত্যু হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম আমি শেষ, আমি মরে গেছি। অদ্ভুত তিনটি সেকেন্ড ধরে আমি ওর মুখের ভেতরে ছিলাম।
ভাগ্যক্রমে তিমিটি আদ্রিয়ানকে দ্রুত মুখ থেকে ছুড়ে বের করে দেয়।
আরেকটি কায়াকে থাকা আদ্রিয়ানের বাবা এই পুরো ঘটনাটির ভিডিও করেন। তার বাবা ডেল সিমানকাস বলেন, আমি ক্যামেরা চালু করার পর আমার পেছনে সজোরে একটি ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ পেলাম। আমি পেছনে ঘুরে কিছুই দেখলাম না। তখনই ভয় পেলাম যখন আদ্রিয়ানকে আর দেখলাম না। তিন সেকেন্ড পর সে হঠাৎ ছিটকে এলো কায়কটি ছাড়াই। এর এক সেকেন্ড পর কায়কটি ভেসে উঠল আর তখন আমি কিছু একটার পাখনা দেখলাম।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিজ্ঞানী ভানেসা পিরোত্তা বলেছেন, হাম্পব্যাক তিমিটি হয়তো ওই সময় মাছ অথবা চিংড়ি খাচ্ছিল। আর তার নৌকাটি সেগুলোর মাঝে পড়ে যায়। তাকে আসলে তিমিটি গিলে খায়নি। তিনি মাঝে পড়ে যান। এই তিমি মানুষের আকার কোনো কিছু শিকার করে না। মানুষকে গ্রাস করার সক্ষমতা তাদের নেই। কারণ তিমির খাদ্যনালী সরু এবং তাদের দাঁত নেই।
আমারবাঙলা/এমআরইউ