ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারর্জি হালেভি এবং গাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল ইয়ারন ফিঙ্কেলম্যান পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েক দিনের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শীর্ষ এই দুই কর্মকর্তার পদত্যাগের ঘটনা ঘটলো।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর প্রকাশিত পদত্যাগপত্রে হালেভি বলেছেন, ৭ অক্টোবর (সেনাবাহিনীর) ব্যর্থতার জন্য নিজের দায় স্বীকার করে তিনি বিদায় নিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, সামরিক বাহিনীর ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্যের’ সময়ে তিনি পদত্যাগ করছেন। তবে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন হালেভি।
ইসরায়েলি এই সেনাপ্রধান আরো বলেছেন, যুদ্ধের সব উদ্দেশ্য এখনো অর্জিত হয়নি। হামাস ও এর শাসন করার সক্ষমতাকে আরো ধ্বংস, জিম্মিদের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে লড়াই চালিয়ে যাবে সেনাবাহিনী। আর এর মধ্য দিয়ে হামাসের হামলায় বাস্তুচ্যুত ইসরায়েলিরা ফিরে আসতে সক্ষম হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের কিব্বুৎজে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালান গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলে প্রবেশের পর প্রথমে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২১০ জনকে হত্যা করেন তারা। পরে সেখান ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গাজায় বন্দি রাখেন হামাস যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর গত ১৫ মাস ধরে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো লক্ষাধিক মানুষ। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
আমারবাঙলা/জিজি