যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রায় এক হাজার ৫০০ জনকে কারামুক্ত করার জন্য এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস ভবনটিতে দাঙ্গা বাঁধে।
এ বিষয়ে ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আইনি কৌঁসুলি ড্যারেক স্ট্রম বলেন, বন্দীরা যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার রাতের আগেই ওয়াশিংটনের কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।
ক্যাপিটলে দাঙ্গায় জড়িত হাজার দেড়েক সমর্থককে মুক্তি দেওয়ার ইঙ্গিত কয়েক মাস আগে থেকেই দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি তা বাস্তবায়ন করলেন।
চার বছর আগের ওই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের সত্যায়ন প্রক্রিয়া চলছিল। এ জন্য ডাকা হয়েছিল সিনেট ও কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন। ওই প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় সে সময়ের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা সত্যায়ন প্রক্রিয়া আটকে দিতে ক্যাপিটাল ভবনে হামলা চালান।
ওই ঘটনার চার বছর পূর্তিতে ৬ জানুয়ারি সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যে ঘটনা ঘটেছিল, তার চার বছর পর সেটি ভুলে যাওয়া বা পুনর্লিখিত হওয়া— কোনোটিই উচিত হবে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্পপন্থী বিক্ষোভকারীদের কংগ্রেস ভবনে ওই হামলার ঘটনায় অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছিলেন।
ডেমোক্র্যাটরা ওই হামলায় উস্কানি দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরে সিনেটে দুই তৃতীয়াংশ ভোট না থাকায় ট্রাম্প শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যান।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের দিনের প্রায় পুরোটা সময় তার সমর্থকরা ডিসি জেলের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনায় ভাষণ দিয়েছিলেন, তখন তিনি ঘোষণা করেন যে ওভাল হাউজে পৌঁছেই তিনি ৬ জানুয়ারির ঘটনার জন্য অভিযুক্তদের ক্ষমা করবেন। সেসময় উপস্থিত জনতার মধ্য থেকে আনন্দধ্বনি শোনা যায়।
একজন নারী চিৎকার করে বলছিলেন, 'ফ্রিডম!' বা (স্বাধীনতা)। ক্যাপিটল হিল আক্রমণের জন্য জেলবন্দি ব্যক্তিদেরকে ডোনাল্ড ট্রাম্প 'রাজনৈতিক বন্দি' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তিনি তাদেরকে ক্ষমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
যদিও এটি পরিষ্কার নয় যে এই ক্ষমা কতদূর পর্যন্ত যাবে এবং দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদেরকেও এই ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা।
এ ছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বড় ধরনের কিছু ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পানামা খাল ফেরত নেওয়া, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির মতো ঘোষণাও রয়েছে।
এর পাশাপাশি বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশও বাতিল করেন তিনি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ