জাতির উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে দেওয়া এই ভাষণে তিনি নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে বিকাশমান একটি বিপজ্জনক গোষ্ঠীতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রহরীর ভূমিকা নিতে আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রিপাবলিকান পার্টির ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। আর মেয়াদ শেষে বিদায় নেবেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বাইডেন। ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার দিন কয়েক আগে বাইডেন তার বিদায়ী ভাষণ দিলেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বাইডেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও বাইডেন লড়তে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।
প্রাইমটাইমে দেওয়া ভাষণে ৮২ বছর বয়সী বাইডেন বলেন, আজ আমেরিকায় চরম সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাবের একটি অলিগার্কি বিকশিত হচ্ছে; যা আক্ষরিক অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি খুব অল্পসংখ্যক অতিধনী লোকের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রীকরণ।
অতি-ধনীকদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাইডেন।
বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি অতি-ধনীক ‘প্রযুক্তি শিল্প কমপ্লেক্স’ সম্পর্কেও আমেরিকানদের সতর্ক করেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এটি নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। দেশের জন্য সত্যিকারের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
বাইডেন তার ভাষণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফ্ল্যাটফর্মগুলোকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, আমেরিকানরা ভুলতথ্য ও অপতথ্যের নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে; যা ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফ্ল্যাটফর্মগুলোর জবাবদিহির আহ্বান জানান তিনি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) বিপুল সম্ভাবনা দেখলেও এর বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন বাইডেন। তিনি বলেন, এআই বিপুল সম্ভাবনা উপহার দিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রহরা না থাকলে তা নতুন হুমকির জন্ম দিতে পারে।
রূপান্তরমূলক প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই চীনের ওপর নেতৃত্ব নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।
বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমার অর্জনকে হুমকির মুখে ফেলেছে প্রভাবশালী শক্তি। ক্ষমতা, মুনাফার স্বার্থে তারা এই কাজ করছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা নৃশংস সহিংসতার পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। এই প্রসঙ্গটিও বাইডেনের ভাষণে উঠে এসেছে। বাইডেন দাবি করেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তিনি গত বছরের মে মাসে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এখন যে চুক্তিটিতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে, তা তার প্রস্তাবিত কাঠামোর উপর ভিত্তি করেই করা।
বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি তার প্রশাসনের সাফল্যের জন্য গর্বিত।
আশাবাদী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাইডেন তার ভাষণ শেষ করেন। তিনি আমেরিকানদের দেশ সম্পর্কে তার আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আমেরিকানদের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, এখন দেশের জনগণের প্রহরীর ভূমিকা পালন করার পালা।
আমারবাঙলা/এমআরইউ