বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে গত ৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় চলে যান সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এর এক সপ্তাহ পর নীরবতা ভাঙলেন তিনি। একটি বিবৃতিও দিয়েছেন বাশার আল-আসাদ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাশার আল-আসাদ বলেন, আমি কখনো ব্যক্তিগত লাভের জন্য পদ চাইনি। আমি সর্বদা নিজেকে সিরিয়ার জনগণের বিশ্বাস দ্বারা সমর্থিত একজন জাতীয় অভিভাবক হিসেবে বিবেচনা করেছি। দামেস্ক পতনের পর আমার দেশ ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু পশ্চিম সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটিতে হামলার পর দেশটির সামরিক বাহিনী আমাকে সরিয়ে নেয়।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি পরিচালিত টেলিগ্রাম চ্যানেলে তিনি এ কথা জানান। যদিও এটি পরিষ্কার নয় যে, বর্তমানে চ্যানেলটি কে নিয়ন্ত্রণ করছে বা বাশার নিজে এটি লিখেছেন কিনা।
আরবি ও ইংরেজি উভয় ভাষায় প্রকাশিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিদ্রোহীরা রাজধানীতে হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পর ৮ ডিসেম্বর সকালে আমি দামেস্ক ত্যাগ করি। আমি রাশিয়ান মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে লাতাকিয়ার উপকূলীয় প্রদেশের হামিমিম বিমান ঘাঁটিতে আশ্রয় নিই। সেখানে আমি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা করেছিলাম।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সেই রাতে রাশিয়ান ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হয়। এরপর রাশিয়ানরা আমাকে মস্কোতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমি দেশত্যাগ করিনি।
বাশার বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে কোনো সময়েই আমি পদত্যাগ বা আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবিনি। এমনকি কোনো ব্যক্তি বা দলের দ্বারা এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়াই ছিল একমাত্র পদক্ষেপ।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, যখন রাষ্ট্র সন্ত্রাসের কবলে পড়ে এবং অর্থবহ অবদান রাখার ক্ষমতা হারিয়ে যায়, তখন যে কোনো অবস্থান উদ্দেশ্যহীন হয়ে যায়।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বাশার প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার ভয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে আবুধাবি। পরে তার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেন পুতিন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ কাতারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে চুক্তি করে আসাদকে মস্কোতে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেন।
আসাদের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল জালালি জানান, পালানোর রাতেও আসাদ পরিস্থিতি নিয়ে তাদের বিভ্রান্ত করেছিলেন। আগের রাতেও শেষ ফোনালাপে তিনি বলেছিলেন, ‘আগামীকাল দেখা যাবে’।
আমারবাঙলা/এমআরইউ