বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত দুই দিনে সিরিয়ায় ৪৮০টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিদ্রোহীদের মাত্র ১২ দিনের তীব্র হামলায় পতন ঘটেছে ২৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের। এরমধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটলো আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের সাম্রাজ্যের।
স্বৈরাচার পতনের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও উচ্ছ্বসিত সিরিয়ার বাসিন্দারা। তবে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তির বদলে দানা বেধেছে উদ্বেগ। গত দুই দিনে ৪৮০ বার দেশটির কৌশলগত বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এরমধ্যে ১৫টি নৌযান, বিমান-বিধ্বংসী ব্যাটারি এবং বেশ কয়েকটি শহরে অস্ত্র উৎপাদনকারী কেন্দ্রও আছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, ‘গত ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে ৪৮০টি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ১৫টি নৌযান, বিমান-বিধ্বংসী ব্যাটারি এবং বেশ কয়েকটি অস্ত্র উৎপাদন সাইট ছিল।’
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, অস্ত্রের গুদাম, গোলাবারুদের গুদাম, বিমানবন্দর, নৌঘাঁটি ও গবেষণা কেন্দ্রসহ সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, আসাদ সরকারের পতনের পর অস্ত্র যাতে ‘চরমপন্থিদের হাতে’ চলে না যায়, সেজন্যই এ পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
এ ছাড়া সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে একটি প্রতিরক্ষা অঞ্চল গড়ে তুলতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, অধিকৃত গোলান মালভূমিতে উপস্থিতি আরো জানান দিতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গত রবিবার সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর পরই দামেস্কের একটি রাসায়নিক অস্ত্র কারখানায় হামলা চালায় আইডিএফ, যাতে বিদ্রোহীরা এই অস্ত্র কারখানা দখলে নিতে না পারে।
আগের দিন শনিবার সিরিয়ার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের ওপর শক্তিশালী আক্রমণ হতে পারে। আমরা তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।’
বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পরপরই সিরিয়ার অধিকৃত গোলান মালভূমি দখলে নেয় নেতানিয়াহু বাহিনী। এরপর তারা গত মঙ্গলবার হারমন পার্বত্য অঞ্চল দখলে নিয়েছে।
এদিকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মোহাম্মদ আল-বশির। তিনি বলেছেন, ‘সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রয়োজন। সবাই ধৈর্য ধরুন। আমরা সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে নাগরিক পরিষেবা চালু করার চেষ্টা করছি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করার জন্য কাজ করছি।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ