বিজেপি নেতা ও তেলেঙ্গানার বিধায়ক টি রাজা সিং একটি জনসভার মঞ্চে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছিঁড়েছেন। বাংলাদেশে হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে এবং তাদের দোকান লুট করা হচ্ছে দাবি করে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বলেন, ১৫ মিনিটের জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দিন, যাতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন চলছে, তার বিরুদ্ধে লড়াই করে পরিস্থিতি পরিষ্কার (ক্লিয়ার) করতে পারি।
টি রাজা সিং এসময় বাংলাদেশকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘যারা ভারতের বিরুদ্ধে যাবে, তারা একই পরিণতির শিকার হবে।’ এ সময় তিনি একটি তলোয়ারও বের করেন এবং বলেন, ‘এই তলোয়ার কেবল খাপের মধ্যে পুরে রাখার জন্য নয়। এটি প্রতিটি হিন্দুর বাড়িতে থাকা উচিত।’
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দক্ষিণ গোয়ার কুরচোরেমে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদের গোশামহল কেন্দ্রের বিধায়ক টি রাজা সিং বলেছেন, গোয়ায় হিন্দু জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং দাবি করেছেন, ‘যেখানে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে, সেখানেই হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।’
রাজা টি সিং বলেন, ‘আমি এই রাজ্যের গভর্নরের একটি বক্তব্য পড়ছিলাম। তিনি বলেছেন, গোয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার শতাংশ, অথচ ১০-১৫ বছর আগে তিন শতাংশ ছিল। এখন বেড়ে ১২ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি এমন একটি বিষয় যা আমাদের বিবেচনা ও চিন্তা করা উচিত...।’
রাজা সিং আরো দাবি করেন, আগামী ২০-২৫ বছর যদি হিন্দুরা ‘হাম দো হামারে দো’ নীতি অনুসরণ করে, তাহলে তারা পাকিস্তানের হিন্দুদের মতোই পরিস্থিতি এবং নির্যাতনের শিকার হবে।
তিনি আরো বলেন, যদি ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়তে থাকে এবং তাদের সাংসদ সংখ্যা ৩০০ হয়ে যায়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী কোন সম্প্রদায় থেকে আসবেন? তাদের থেকেই হবে, তাই না? ...আর যেসব দেশে তাদের (মুসলিমদের) প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে হিন্দুদের কী অবস্থা হয়েছে... ইতিহাস তার সাক্ষী।
৪৮ মিনিটের বক্তৃতায় রাজা সিং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্যে যোগ দিন এবং লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সবাইকে একত্রিত হতে হবে।’
বিরোধী দল কংগ্রেস গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের কাছে রাজা সিংকে তাকে ‘বিতর্কিত ব্যক্ত’ উল্লেখ করে তার গোয়া সফর বাতিলের আবেদন জানিয়েছিল। শুক্রবার কংগ্রেস বলেছিল, এই সফর গোয়ার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে এবং শান্তিপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে গোয়ার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে পারে।
গোয়ার কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি গিরীশ বলেছিলেন, ‘গোয়া বিশ্বব্যাপী তার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য পরিচিত। টি রাজা সিংয়ের মতো কাউকে আমন্ত্রণ জানিয়ে—যিনি ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন— বিজেপি এই প্রিয় ঐতিহ্য বিপন্ন করছে।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ