আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে বেশ চাপে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করা হয়।
ইসরায়েল আইসিসির এখতিয়ার স্বীকার করে না। আর নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ট আত্মসমর্পণ করবেন না বলেও জানিয়েছে দেশটি। তবে তাদের চলাচলের সুযোগ ঠিকই সংকুচিত হয়ে গেছে। আইসিসির প্রতিষ্ঠাতা চুক্তি রোম সংবিধির আওতায় ১২৪টি দেশ রয়েছে। আর এসব দেশ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধ্য।
এর মধ্যে ৩৩টি আফ্রিকান, ১৯টি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয়, ১৯টি পূর্ব-ইউরোপীয়, ২৮টি ল্যাটিন অ্যামেরিকান এবং ক্যারিবীয় ও ২৫টি পশ্চিম ইউরোপীয় ও অন্যান্য রাষ্ট্র রয়েছে।
গত বছরের মার্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অভিযুক্ত করে আইসিসি। এরপর থেকেই তিনি চলাচল সংকুচিত করে দেন। যদিও পরোয়ানাভুক্ত ব্যক্তিকে আইসিসির সনদে স্বাক্ষর করা দেশের গ্রেফতার না করারও নজির রয়েছে। এর আগে সুদানের ওমার হাসান আল-বশিরের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছিল। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ও জর্ডানে গেলেও তাকে গ্রেফতার করেনি দেশ দুটি।
এ ছাড়া আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়েই কয়েক মাস আগে আইসিসির সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়া সফর করেছিলেন রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনকে সর্বোচ্চ আতিথেয়তাও দিয়েছিল চেঙ্গিস খানের দেশ।
নেতানিয়াহুর ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটতে পারে। তবে এরই মধ্যে ইতালি জানিয়েছে, দেশটিতে পা রাখলেই গ্রেফতার হবেন নেতানিয়াহু। তবে হাঙ্গেরি নেতানিয়াহুকে সাদরে গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে। যদিও মানবাধিকারের কথা বলা ইসরায়েলের বিভিন্ন ইউরোপীয় মিত্র দেশ তাকে নিয়ে চাপে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, এই রায়ের কোনো গুরুত্ব নেই। তিনি একে ইহুদিবিদ্বেষী রায় বলে দাবি করেছেন।
সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট বলেছেন, হেগের আদালতের এই বিচার স্মৃতিতে থেকে যাবে। এই রায় ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং হত্যাকারী হামাস নেতাদের একই আসনে বসিয়েছে। এই রায় হামাসের সহিংসতাকে সমর্থন করেছে। তারা যেভাবে শিশুদের হত্যা করেছে, নারীদের নির্যাতন করেছে, বৃদ্ধদের বিছানা থেকে তুলে নিয়ে গেছে, তা সমর্থন পেলো এই রায়ে।গ্যালান্টের বক্তব্য, এই রায় আত্মরক্ষার অধিকারকে মর্যাদা দেয়নি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ