যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলে তাকে ইউক্রেন যুদ্ধ আর না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
এই কথোপকথনের বিষয়ে জ্ঞাত এক কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
রবিবার (১০ নভেম্বর) নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, গত কিছুদিনের মধ্যেই ট্রাম্প ও পুতিন কথা বলেছেন।
ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কির সঙ্গে গত বুধবার কথা বলেছেন। কিয়েভের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ সামরিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে তার সমালোচনা করেন ট্রাম্প, দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন; তবে কীভাবে এটি করবেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনের বিষয়ে তাদের আগাম কিছু জানানো হয়নি।
প্রথম ওয়াশিংটন পোস্টে খবর হওয়া ওই ফোন কলের বিষয়ে প্রশ্নে ট্রাম্পের যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক স্টেভেন চন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও অন্য বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কলের বিষয়ে আমরা মন্তব্য করি না।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকা রাশিয়ার দূতাবাসও এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য জানানো রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করেছেন ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বাইডেন তার ওভাল দপ্তরে বুধবার (১৩ নভেম্বর) আসার জন্য ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান রবিবার জানিয়েছেন, বাইডেনের প্রধান বার্তা হবে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করার জন্য তার প্রতিশ্রুতি, এর পাশাপাশি ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে কী হচ্ছে তা নিয়ে আলাপ করবেন। সিবিএন নিউজের ‘ফেইস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে সালিভান বলেন, ইউক্রেনকে ছেড়ে আসা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না, এই বিষয়টি কংগ্রেস ও আগামী প্রশাসনকে বোঝানোর জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনের হাতে ৭০ দিনের মতো সময় আছে। ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করার অর্থ ইউরোপের আরো অস্থিরতা।
সালিভান এসব কথা যেদিন বলেছেন সেই রবিবার ইউক্রেন ৩৪টি ড্রোন যোগে মস্কোয় হামলা চালিয়েছে। এটি ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার রাজধানীতে কিয়েভের চালানো বৃহত্তম ড্রোন হামলা।
গত ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ওয়াশিংটন দেশটিকে শত শত কোটি ডলারের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে। ট্রাম্প বারবার এসব তহবিল দেওয়ার সমালোচনা করেছেন এবং অন্য রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদেরও বিরোধিতা করেছেন।
গত বছর ট্রাম্প দাবি করেন, ওই সময় তিনি হোয়াইট হাউজে থাকলে পুতিন কখনোই ইউক্রেনে আক্রমণ চালাতেন না।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জবাবদিহি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাইডেনের সময় ইউক্রেনকে ১৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলারেরও বেশি সহায়তা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।
আমারবাঙলা/এমআরইউ