সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ

ট্রাম্প নাকি কমলা, কে হাসবে শেষ হাসি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এ ভোটে তৈরি হবে ইতিহাস। ভোটাররা হয় এমন একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবেন যিনি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরবেন অথবা এমন একজনকে যিনি দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন। যুক্তরাষ্ট্র আড়াইশ বছরের ইতিহাসে কোনো নারী প্রেসিডেন্ট পায়নি। এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন দেশটির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আর রিপাবলিকান দল থেকে লড়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

কমলা-ট্রাম্প ছাড়াও এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েছেন ৭১ বছর বয়সি খ্যাতনামা অধ্যাপক কর্নেল ওয়েস্ট, গ্রিন পার্টি থেকে ৭৪ বছর বয়সি নারী রাজনীতিক জিল স্টেইন, লিবারটেরিয়ান পার্টির মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চেজ অলিভার এবং পার্টি ফর সোস্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন দলের প্রার্থী ক্লদিয়া দে লা ক্রুজ।

প্রচারণায় গিয়ে ট্রাম্প-কমলা দুই প্রার্থীই নানা ইস্যুতে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অভ্যন্তরীণ সংকট সমাধানের পাশাপাশি ইউক্রেন ও গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ, আফগানিস্তানে তালেবান ইস্যুসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা বৈশ্বিক ইস্যুও গুরুত্ব পেয়েছে। বিভিন্ন জরিয়ে এ দুজনের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার আভাস মিলেছে। আদতে হয়েছেও তাই। অবশ্য ভোটের ফলাফল পেতে কয়েক দিন লেগে যাবে। তখন জানা যাবে হোয়াইট হাউজে নতুন চার বছরের মেয়াদের জন্য কে উঠবেন। পঞ্চাশটি রাজ্যে এবং ডিসট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ায় ১৮ কোটি ৬০ লাখ ভোটার ভোট দিতে পারবেন। তবে বেশির ভাগ রাজ্যে ডাকযোগে ভোট এবং আগাম ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় আট কোটির বেশি মানুষ মঙ্গলবারের আগেই ভোট দিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে চার কোটি ৪০ লাখের বেশি ভোটার ভোটকেন্দ্র গিয়ে আর প্রায় তিন কোটি সাত লাখ ভোটার ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।

জয়ের ব্যাপারে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প, দুজনই আশাবাদী।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোরের কাটা ৬টার ঘরে যেতেই বিভিন্ন রাজ্যে ভোটগ্রহণ শুরু করা হয়। দেশটিতে রাজ্যভেদে সময়ের ব্যবধান এবং একেক রাজ্যে একেক সময় ভোটগ্রহণ শুরুর সময় নির্ধারিত থাকায় পুরোদমে সব ভোটকেন্দ্র সরব হতে সময় লাগে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের স্থানীয় সময় ভোর ৬টার খবরে বলা হয়েছিল, কানেকটিকাট, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং ভার্জিনিয়াসহ আটটি রাজ্যে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটাররা কেন্দ্রগুলোতে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। এ ছাড়া ইন্ডিয়ানা এবং কেন্টাকিতে ভোর ৬টায় ভোট শুরু হলেও এসব রাজ্যের কিছু অঞ্চলে সকাল ৭টার দিকে ভোটকেন্দ্রগুলো খোলা হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিছু রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছিল স্নাইপার ইউনিট।

ডিক্সভিল শহরে মধ্যরাতে ভোট, তিন ভোট করে পেলেন কমলা-ট্রাম্প

একটি শহরে ভোটগ্রহণ ও ভোট গণনা শেষ হয়েছে। ফলাফলে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প সমসংখ্যক ভোট পেয়েছেন। ভোটকেন্দ্রটি হলো নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের উত্তরে অবস্থিত ছোট্ট শহর ডিক্সভিল নচে। সেই কেন্দ্রে এবার মোট ভোটার ছয়জন।

সোমবার দিবাগত মধ্যরাতের পরপরই ডিক্সভিল নচ শহরটিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ভোট গণনায় দেখা গেছে, ছয়টি ভোটের মধ্যে কমলা পেয়েছেন তিন ভোট, ট্রাম্পও তিন ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ প্রথম ফলাফলে কমলা ও ট্রাম্পের লড়াইটা সমানে সমান।

অশুভ ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছি : ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কমলা হ্যারিস নয়, অশুভ ডেমোক্র্যাট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়ছেন। মিশিগানে শেষ প্রচার সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, আমরা ওয়াশিংটনে এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থাকে পরাজিত করব। কারণ, আমি কমলার বিরুদ্ধে লড়ছি না। অশুভ ডেমোক্র্যাট সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়ছি। এরা দুষ্টু লোক।

এই যাত্রা অবিশ্বাস্য হবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এ যাত্রা হবে দুঃখেরও। কারণ, এটিই হবে শেষবার। এ নির্বাচনে না জিতলে আগামীতে আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
মিশিগনে শেষ দিনের প্রচারে তিনি বলেছেন, এটিই আমার শেষ প্রচার। তবে জরিপে জনমর্থনের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে ট্রাম্প এও বলেছেন যে তিনি আশাবাদী। ট্রাম্প বলেন, সুসংবাদ আছে। আমরা যাকিছু করছি তা আমাদেরকে জয় পাওয়ার অবস্থানেই নিয়ে যাচ্ছে।

কমলা হ্যারিসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণও করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি কমলাকে মৌলবাদী, বাম ও পাগল বলে অভিহিত করেছেন।

আমরা যখন লড়ি, আমরা জিতি: হ্যারিস

কমলা হ্যারিস পেনসিলভেনিয়া রাজ্যে তার শেষ প্রচার সমাবেশে একতার শক্তি ও নারী অধিকারের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা যখন লড়ি, আমরা জিতি। সমাবেশে উপস্থিত জনতাকেও সমস্বরে তার এই কথার সঙ্গে গলা মেলানোর ডাক দেন হ্যারিস।

জনতার সামনে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমরা কি আমেরিকার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি? আপনারা কি এর জন্য লড়তে প্রস্তুত? কারণ, আমরা যখন লড়ি, তখন আমরা জয়ী হই। ভাষণে হ্যারিস বলেন, হতভাগ্য দিয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু জয়ের আসনে পৌঁছবেন। আমাদের এই জীবনকালে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের দিনের মুহূর্তটি আমাদের অনুকূলেই আছে। এ নির্বাচন হতে পারে ইতিহাসে অন্যতম তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন।

কে জিতছেন, জানা যাবে কখন

দেশটির ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এতে কে জয়ী হচ্ছেন, তা জানতে কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা।

মার্কিন ব্যবস্থায় নাগরিকদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। নাগরিকদের ভোট ভাগ হয়ে যায় ৫৩৮টি নির্বাচক ভোটের মধ্যে। এই ভোটগুলোর বিন্যাস ঠিক করে দেয়, কে হবেন প্রেসিডেন্ট।

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করেছিল ৭ নভেম্বর (শনিবার)। কিন্তু নির্বাচন শেষ হয়েছিল এর আগের মঙ্গলবার। ২০১৬ ও ২০১২ সালে অবশ্য ভোটারদের ফলাফল পেতে তুলনামূলক কম সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

যে প্রার্থী জনগণের ভোট জিতে নেন, প্রতিটি রাজ্য তার ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটগুলো ওই প্রার্থীকে দেয়। বড় রাজ্যগুলোর ভাগে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট বেশি থাকে। সেসব রাজ্যে কংগ্রেসের প্রতিনিধি বেশি।

কমলা-ট্রাম্পের মধ্যে অন্তত ২৭০টি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকটোরাল ভোট পেতে কঠিন লড়াই হয়েছে এ সংখ্যাটি প্রেসিডেন্ট হওয়ার নিশ্চয়তা দেবে।

তবে এবারের নির্বাচনের লড়াই একেবারে শেষ সময় পর্যন্ত গড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা ভোটের ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এ ছাড়া ভোট গণনা নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জের মতো জটিলতাও তৈরি হতে পারে।

ভোট গণনায় কত সময় লাগতে পারে

ভোট শেষে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু ও ভোট গণনা করবেন। এসব কর্মকর্তাকে বাছাই বা নিয়োগ করা হয়। ভোট গণনার পদ্ধতি একেক জায়গায় একেক রকম।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্য ডাকযোগে ও দেশের বাইরে থেকে গৃহীত ভোট গণনার প্রক্রিয়া নিয়ে আইন পরিবর্তন করেছে। যদিও পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে এমন পরিবর্তন আনা হয়নি। এ দুই দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য দুই দলের জন্য জয়-পরাজয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

কে সত্যায়ন করে

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগেই মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে সম্ভাব্য ফলাফল প্রকাশ করে। তবে এ প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক নয়। অঙ্গরাজ্য পর্যায় থেকে নির্বাচনী ফলাফলের সত্যায়ন করতে হয়। ফলাফল সত্যায়নের এ শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর। আর ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সিনেট সভাপতিকে (বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস) প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোটের সনদ গ্রহণ করতে হবে। ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভোট গণনা করে ও ফলাফল নিশ্চিত করে। ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়।

যে কারণে ফলাফল ঘোষণায় দেরি হতে পারে

নির্বাচনে কংগ্রেসের সত্যায়ন একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এখন নির্বাচনী ফলাফলের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ২০২২ সালের (মধ্যবর্তী) নির্বাচনে ফলাফল দেরিতে সত্যায়নের পক্ষে মত দিয়েছিলেন অন্তত ২২ কাউন্টির নির্বাচনী কর্মকর্তারা, যা ২০২০ সালের (প্রেসিডেন্ট) নির্বাচনের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।

ওয়াশিংটনের ‘সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিকস (সিআরইডব্লিউ)’ নামের একটি সংগঠন বলেছে, সেবার অন্তত ৩৫ জন নির্বাচনী কর্মকর্তা ফলাফল সত্যায়ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং সম্ভবত পুনরায় নির্বাচন চাইছিলেন। এবার তারা একই কাজ করতে পারেন।

সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, সফল প্রতিবন্ধকতার কারণে অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ভোটের ফলাফল সত্যায়নের তারিখ বদলে যেতে পারে।

বিভিন্ন রাজ্যে কড়া নিরাপত্তা

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সহিংসতার আশঙ্কায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। সম্ভাব্য রাজনৈতিক সহিংসতা এড়াতে দেশজুড়ে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

নেভাদার লাস ভেগাসে ভোট গণনার কেন্দ্র ঘিরে নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় যেসব স্থানে ট্রাম্পের সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছিলেন, এবার সেসব জায়গা বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। নেভাদা ও অ্যারিজোনার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রে এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।

এরই মধ্যে অ্যারিজোনার মারিকোপা কাউন্টিতে ভোট গণনা কেন্দ্রের চারপাশে ধাতব বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। অ্যারিজোনা কাউন্টির শেরিফ রাস স্কিনার বলেছেন, সহিংসতার আশঙ্কায় তার দপ্তর উচ্চ সতর্কতা অবস্থায় রয়েছে। ভোটকেন্দ্রের চারপাশে পর্যবেক্ষণ চালাতে ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে।

বিশেষ করে, ভোটের পরবর্তী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরো উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। এ কারণে ভোট গণনার পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করবে এবং যেকোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ‘জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা) নীতি প্রয়োগ করা হবে।

কঠোর নিরাপত্তা শুধু গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতেই সীমাবদ্ধ নেই। আলাবামা, অ্যারিজোনা, ডেলাওয়ারসহ ১৯টি অঙ্গরাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে বা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে, অ্যারিজোনায় প্রার্থনা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত অনেক স্কুল ও চার্চ ভবন এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভোটের সময় সহিংসতা রোধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতা ও ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীগুলো জনগণের মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

ট্রাম্পের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

নিজেদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্টের ক্ষমতা পরিবর্তন এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য জয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছে ইউরোপীয় দেশগুলের জোট ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)।

ইউরোপের এক ডজনেরও বেশি রাজনীতিক, কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।

অবশ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে এসব রাজনীতিক, কূটনীতিক এবং নীতি-নির্ধারকরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সম্ভাব্য বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো জটিলতা সৃষ্টি করবে না। কারণ এর আগে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প, সে সময় তাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে ইইউ নেতাদের। ফলে যেহেতু ট্রাম্পের চিন্তা-ভাবনা, রাজনৈতিক দর্শন প্রভৃতি তাদের কাছে অপরিচিত নয়, তাই ক্ষমতার পালাবদলে এবার যদি ট্রাম্প জয়ী হন-তাহলেও যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ সম্পর্কে তার তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।

জার্মানির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী মাইকেল স্টেম্পফ্লি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, একটি ব্যাপার আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই। ইউরোপ কিন্তু মোটেও হতবুদ্ধি অবস্থায় নেই। আমরা খুব ভালো করেই জানি যে যেই ক্ষমতায় আসুক, তার জন্য আগামী দিনগুলোতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চল। ইউরোপের জন্যও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এই অঞ্চলটি।

তবে দুশ্চিন্তার কারণ যে একেবারেই নেই-এমন নয়। কারণ আগের বার যখন দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প, সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপীয় মিত্রদের জোট ন্যাটোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক বেশ তিক্ত হয়ে পড়েছিল। তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে এক পর্যায়ে ট্রাম্প ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন।

নির্বাচনে জিতে যদি তিনি সত্যিই ক্ষমতা গ্রহণ করেন, সেক্ষেত্রে ফের এমন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ ২০২১ সালে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হওয়ার পর গত চার বছরে তিনি
নিজের রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এনেছেন-এমন কোনো আলামত এখনো স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়নি।

জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটির চেয়ারম্যান টমাস এরনডিল ওয়াশিংটন পোস্টকে এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রকৃতপক্ষে জো বাইডেন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের শেষ প্রেসিডেন্ট, যিনি নিজেকে সত্যিকার অর্থেই আটলান্টিক অঞ্চলের বাসিন্দা মনে করতেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রেসিডেন্টের যেসব বৈশিষ্ট থাকা উচিত, সেসব তার মধ্যে রয়েছে। এখন যেহেতু তিনি নেই, তাই (যুক্তরাষ্ট্রে) যেই আসুক তাতে এই শূন্যতা পূরণ হবে না। আমাদের উচিত হবে আরো বেশি দায়িত্বশীল হয়ে ওঠা, বিশেষ করে নিরাপত্তার প্রশ্নে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কেও আঘাত আসতে পারে। কারণ গতবার যখন ক্ষমতায় ছিলেন, ইউরোপের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। এবারো তেমন কিছু হওয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

স্মরণে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ‘সুজেয় শ্যাম’

মহান মুক্তিযুদ্ধের শব্দ সৈনিক, স্বাধীন বাংলা বেতার...

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মুক্তিজোটের অভিনন্দন

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জা...

‘আমাকে পিটাইতে পিটাইতে শোয়াইয়া ফেলে’

আদালত প্রাঙ্গনেই মারধোর করা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর আইনজীবি স্ব...

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর)। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দি...

শোকজের জবাব দিলেন গিয়াস কাদের চৌধুরী, ব্যবসায়ী জানালেন চাঁদা চাননি তিনি

এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও তাকে নির্যাতন করার অভিযোগে বিএনপির ভাইস চে...

২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৬৬

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এব...

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: তারেক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন,...

স্মরণে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ‘সুজেয় শ্যাম’

মহান মুক্তিযুদ্ধের শব্দ সৈনিক, স্বাধীন বাংলা বেতার...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা