হিজাব ঠিকমতো পরা হয়নি বলে ইরনের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণী। পরে দেশটির কড়া পোশাকবিধির প্রতিবাদে অন্তর্বাস পরে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি। পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি কোথায় রয়েছেন, তা এখনো অজানা।
সংবাদ সংস্থা এএফপির খবর, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ওই তরুণী। তার নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
তরুণীকে হেনস্তা ও তাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে ইরানে। তরুণীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি উঠেছে।
ইরানে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যামনেস্টি ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়ে তরুণীর মুক্তির দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তরুণীর ওপর যেন কোনো রকম অত্যাচার না হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি বলেছে, হেফাজতে তরুণীর ওপর অত্যাচার এবং দুর্ব্যবহার যেন না হয়, কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি যেন নিজের পরিবার এবং আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে এবং সর্বোপরি, তরুণীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে
তরুণীকে গ্রেপ্তারের সময়ে মারধর এবং তার ওপর যৌন হেনস্থার কিছু অভিযোগ ওঠে এসেছে। সেই অভিযোগগুলোরও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে অ্যামনেস্টি।
শনিবার (২ নভেম্বর) একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অন্তর্বাস পরে হাঁটছেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে একটি জায়গায় গিয়ে বসে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একাই নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আশপাশে যে নারীদের দেখা গেছে, সবারই মাথায় হিজাব, শরীর আপাদমস্তক আবৃত। কিছুক্ষণ পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের ওই তরুণীকে আটক করতে দেখা যায়।
পরে জানা যায়, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাকে কোথায় নিয়ে গেছে, গ্রেপ্তারের পর কোথায় রাখা হয়েছে তরুণীকে, তিনি কী অবস্থায় রয়েছেন— কিছুই স্পষ্ট নয়। যা নিয়ে বিশ্ববাসীর মনে আবারো উদ্বেগ দানা বেঁধেছে। অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে ইরানের কুর্দি নারী মাশা আমিনির কথা।
২০২২ এর সেপ্টেম্বরে তেহরানে মাথায় ঠিকমতো হিজাব না থাকায় মাশা আমিনিকে ধরে নিয়ে যায় ইরানের নীতি পুলিশ। পরে তাদের হেফাজতে আমিনির মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, এতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়।
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী সহিংসভাবে এই বিক্ষোভ দমন করে। কিন্তু তারপর থেকে দেশটির বহু নারী তাদের হিজাব খুলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
আমারবাঙলা/এমআরইউ