সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প না কমলা, কে হাসবেন বিজয়ের হাসি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখন ঘণ্টার গণনায় পড়েছে। এ নির্বাচনকে নিয়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহেরও কমতি নেই। সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের দৃষ্টি এখন এ নির্বাচনের দিকে। তুমুল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছে সব জরিপ। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মাঝে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানাচ্ছে বিশ্ব গণমাধ্যম। যদিও নির্বাচনে প্রার্থী মোট ছয় জন। বাকিরা হলেন- গ্রিন পার্টির জিল স্টেইন, লিবার্টিয়ানের চিজ অলিভার, সোশ্যালিস্ট অ্যান্ড লিবারেশনের ক্লাউডিয়া দে লে ক্রুজ, কনস্টিটিউশনের র‌্যান্ডেল টেরি ও স্বতন্ত্র থেকে কর্নেল ওয়েস্ট।

ট্রাম্প ও কমলা দ্বৈরথের মাঝে অনেক কিছু দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন পর্যন্ত যত জরিপ হয়েছে তাতে দুজনের মাঝে তীব্র লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। তবে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ ও এতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাটিক জো বাইডেনের সমর্থন কমলাকে বিপাকে ফেলতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কারণ কমলাও বাইডেন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে আমেরিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশের প্রেসিডেন্ট পদে নারীকে ভোটাররা চাইবেন কিনা এটিও দেখার বিষয় বলে অনেকের ভাবনা। আবার নারী এবং আফ্রিকা ও ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভুত বলে তিনি সুবিধা পাবেন। তার সামনে ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সব নিয়ে এক অদ্ভুত সমীকরণে দাঁড়িয়ে আছে এ নির্বাচনের ফলাফল। সংশ্লিষ্ট অনেকের মত, ইলেকটোরাল ভোট ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোট যে কারো ভাগ্য বদলে দেবে।

ইতোমধ্যে কিছু অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোট প্রদান শুরু হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে দ্বিদলীয় প্রাধান্য রয়ে গেছে। আলাদাভাবে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টির ভোটব্যাংক রয়েছে বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যে। মূলত কিছু দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য প্রার্থীদের জয়-পরাজয় ঠিক করে দেয়, যেগুলো ‘সুইং স্টেট’ বা ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ হিসেবে পরিচিত।

এ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন নাগরিকদের মাঝেও উদ্বেগের শেষ নেই। মার্কিন সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) এক গবেষণায় দেখিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি ১০ জন নাগরিকের মধ্যে সাত জনই আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মানসিক চাপে আছেন। গত চার বছরে হওয়া দুটি যুদ্ধ, গণহত্যা, নৈতিক প্রশ্ন এবং ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক মেরুকরণ; সব মিলিয়ে এই নির্বাচনের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে আরো অনেককে প্রভাবিত করবে।

এবারের সমীক্ষাগুলোও দেখাচ্ছে, দুই প্রার্থীর মধ্যে তফাৎ নেই বললেই চলে। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে সমীক্ষার গ্রহণযোগ্য ভুলের মাত্রা (মার্জিন অব এরর) হিসেবে নিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস, দুজনেরই নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা সামনে সমান। নির্বাচন-পূর্ব সমীক্ষায় আগের দুবার ট্রাম্প কখনো তার ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বীর এতটা কাছাকাছি ছিলেন না। ২০১৬ এবং ২০২০ সালে দুবারই সুপ্ত ট্রাম্প ভোটারদের হিসাব উঠে আসেনি সমীক্ষায়। এবারো এমন হবে ধরে নিয়ে অনেকে এরই মধ্যে ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করে দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে অনেক কিছুই সম্ভব। ট্রাম্প বড় ব্যবধানে এমনকি ভূমিধস জয়ও পেতে পারেন। একই কথা প্রযোজ্য কমলার ক্ষেত্রেও।

আবার নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান অনেক কমও থাকতে পারে। এমনকি দুই প্রার্থীর ইলেকটোরাল ভোট সমানও হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের রায় দেবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ, যেখানে এখন রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেক্ষেত্রে হয়তো ট্রাম্প জিতবেন। আবার ২০০০ সালের বুশ বনাম আল গোর নির্বাচনের মতোও কিছু হতে পারে। সেবার নির্বাচনের ব্যবধান এতই কম ছিল যে কয়েক সপ্তাহ লাগিয়ে পুনর্গণনা চালানোর পর সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয়েছিল সমাধানের জন্য।

জরিপে জাতীয়ভাবে কে এগিয়ে

জাতীয়ভাবে ভোটারদের নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। জুলাইয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জাতীয়ভাবে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, তার গড় করে দেখা যাচ্ছে, রবিবার (৩ নভেম্বর) পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশের। আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭ শতাংশ।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহগুলোয় কমলা হ্যারিসের দিকে সমর্থন বেশি ছিল। আগস্টের শেষে দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা।

এরপর থেকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুর দিকে পূর্বের অবস্থানই ধরে রেখেছিলেন কমলা হ্যারিস। তবে শেষ কয়েক সপ্তাহে দেখা গেছে, জরিপে কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে এসেছে।

একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গোটা দেশে কতটা জনপ্রিয়, তা জানার জন্য জাতীয়ভাবে করা জরিপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত নির্বাচনে ফলাফল অনুমানের জন্য জাতীয় জরিপই সবচেয়ে ভালো উপায় নয়। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য পৃথক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে ২৭০টি প্রয়োজন জয়ের জন্য। এক রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন, সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় কে এগিয়ে

যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্য আছে ৫০টি। অতীতের নির্বাচনগুলোয় দেখা গেছে, বেশিরভাগ রাজ্য নির্দিষ্ট কোনো একটি দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে থাকেন। এসব রাজ্যে নির্দিষ্ট দলের প্রার্থী জয়ী হয়ে থাকেন। এ কারণে যেসব রাজ্যের নির্দিষ্ট দলকে ভোট দেওয়ার ইতিহাস নেই, সেসব রাজ্য ভোটের ফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এমন রাজ্য রয়েছে সাতটি, যাদের ‘দোদুল্যমান রাজ্য’ বলা হয়ে থাকে।

দোদুল্যমান সাতটি অঙ্গরাজ্য হলো অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভেনিয়া ও উইসকনসিন। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোটারদের নিয়ে করা সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোয় দেখা গেছে, এসব অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প ও কমলার মধ্যে ব্যবধান এতই কম যে কোন প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন, তা বলা মুশকিল। ফলে আন্দাজও করা যাচ্ছে না যে কোন প্রার্থীর পাল্লা ভারী।

হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার পর থেকে জরিপে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় দুই প্রার্থীর প্রতি সমর্থন ওঠানামা করতে দেখা গেছে। আগস্টের শুরু থেকে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা ও নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে সমর্থন কয়েক দফা কম-বেশি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ কখনো একজন এগিয়ে ছিলেন, তো কোনো সময় অন্যজন। তবে এ মুহূর্তে এসব রাজ্যে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আগস্টের শুরু থেকে জনমত জরিপে দোদুল্যমান অন্য তিন অঙ্গরাজ্য মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে এগিয়ে রয়েছেন কমলা হ্যারিস। তবে জরিপে তার জনপ্রিয়তাও ওঠানামা করতে দেখা গেছে। এসব অঙ্গরাজ্যে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে কখনো দুই পয়েন্ট, তো কখনো তিন পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। কিন্ত এখন ব্যবধান আরো কমেছে। সর্বশেষ পেনসিলভানিয়ায় অল্প ব্যবধানে এগিয়ে ট্রাম্প।

এই তিন অঙ্গরাজ্যই একসময় ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ২০১৬ সালে সব উল্টে যায়। আট বছর আগের সেই নির্বাচনে তিন অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেন ট্রাম্প। সেবার তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০২০ সালের নির্বাচনে এসব অঙ্গরাজ্যে জয় পান ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন। এবারো কমলা জয় ধরে রাখতে পারবেন কিনা, তাই দেখার বিষয়।

ইলেকটোরাল ভোট সমান পেলে কী হবে

৫ নভেম্বর নির্বাচনের দিন অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে ভোটকেন্দ্রগুলো খুলবে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র একাধিক ‘টাইম জোন’-এ বিভক্ত হওয়ায় দেখা যাবে সময়ের এমন পার্থক্য। একইভাবে, বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সময় হবে পৃথক। কখনো তা কাউন্টি ভেদেও হবে ভিন্ন। অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ হবে ইস্টার্ন টাইম সন্ধ্যা ৬টা ও মিডনাইট ইস্টার্ন টাইমের (২২:০০-০৪:০০ জিএমটি) মধ্যে।

এদিকে, ভোটকেন্দ্র প্রথম বন্ধ হওয়ার (ইস্টার্ন টাইম সন্ধ্যা ৬টা) সঙ্গে সঙ্গে ভোট গণনার কাজ শুরু হবে। এর কয়েক ঘণ্টা পর থেকে ফলাফল আসতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য কোনগুলো ও তাতে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট কত

সাতটি সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব অঙ্গরাজ্য হলো, পেনসিলভানিয়া (১৯ ইলেকটোরাল ভোট), নর্থ ক্যারোলাইনা (১৬), জর্জিয়া (১৬), মিশিগান (১৫), অ্যারিজোনা (১১), উইসকনসিন (১০) ও নেভাদা (৬)। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে মোট ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ৯৩টি।

নির্বাচনে জিততে একজন প্রার্থীকে মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি পেতে হবে। যেসব অঙ্গরাজ্য থেকে ভোটের প্রথম ফলাফল আসতে পারে সেগুলোর একটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য জর্জিয়া। এরপর রয়েছে নর্থ ক্যারোলাইনা।

ভোট সমান হলে কী হবে

নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই যদি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, অর্থাৎ প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী ২৬৯-২৬৯ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পান কিংবা তৃতীয় কোনো প্রার্থী ইলেকটোরাল ভোট জেতেন, সে ক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘প্রতিনিধি পরিষদ’ ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। এটি ‘কন্টিনজেন্ট ইলেকশন’ নামে পরিচিত। এ ঘটনা মাত্র একবারই হয়েছে, ১৮২৪ সালে। সে বছর ইলেকটোরাল কলেজ ভোট চার প্রার্থীর মধ্যে ভাগাভাগি হওয়ায় কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। অবশ্য এখন রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টি—এ দুই দলের আধিপত্যের কারণে একই রকম ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই বললে চলে।

কন্টিনজেন্ট ইলেকশন এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নির্ধারণ করবে প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ। এ পরিষদে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিদের থাকবে একটি করে ভোট। জয়ী প্রার্থীকে অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধির ভোট পেতে হবে।

এর পর কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ভাইস প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করবে। প্রত্যেক সিনেটরের থাকবে একটি ভোট। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জিততে প্রার্থীকে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা (৫১ ভোট) পেতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে কন্টিনজেন্ট নির্বাচনের তিনটি উদাহরণ রয়েছে। সেগুলো হয় ১৮০১, ১৮২৫ ও ১৮৩৭ সালে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফলাফল দেখা গেছে ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। সেবার জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে মাত্র একটি বেশি (২৭১) ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পান। এর আগে ফ্লোরিডায় ভোট গণনা নিয়ে দেখা দেয় বিতর্ক। তখন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট আল-গোর পেয়েছিলেন ২৬৬ ইলেকটোরাল ভোট।

ইলেকটোরাল কলেজ কী

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশি ভোট পেলেই যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যাবে তা কিন্তু নয়। কারণ, ভোটাররা সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন না। ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ নামে দেশটিতে প্রচলিত এক পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ একজন প্রার্থী সেই অঙ্গরাজ্যের সবকটি ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। নিয়ম হলো- মাইন ও নেব্রাসকা এই দুটি অঙ্গরাজ্য বাদে বাকি সবগুলো রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট মিলিয়ে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তার বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকটি করে ইলেকটোরাল ভোট থাকে, যা ওই অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার মোটামুটিভাবে সমানুপাতিক। ক্যালিফোর্নিয়ায় সর্বাধিক ৫৪টি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে। ভায়োমিং, আলাস্কা ও নর্থ ডাকোটা এবং ওয়াশিংটন ডিসির মতো যেসব অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যা খুবই কম, তাদের হাতে অন্তত তিনটি ইলেকটোরাল ভোট আছে।

সাধারণত অঙ্গরাজ্যগুলো তাদের হাতে থাকা ইলেকটোরাল ভোট সেই প্রার্থীকেই দেয়, যিনি ওই অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের সরাসরি ভোটে জয়ী হয়েছেন।

যে কারণে নাম ‘ইলেকটোরাল কলেজ’

‘কলেজ’ শব্দটির মাধ্যমে সেই ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা একটি অঙ্গরাজ্যের ভোট দেওয়ার অধিকারী। ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ হচ্ছে কর্মকর্তাদের একটি প্যানেল, যাদের ‘ইলেকটরস্’ বলা হয়, এক কথায় নির্বাচকমণ্ডলী। প্রতি চার বছর পর পর এটি গঠন করা হয়। তারাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে বাছাই করেন।

কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্বের অনুপাতে প্রতিটি অঙ্গরাাজ্যের ইলেকটরসের সংখ্যা নির্ধারিত হয়। যা নির্ধারিত হয় অঙ্গরাজ্যের সিনেটরের সংখ্যা (প্রত্যেক রাজ্যে দুইজন) এবং প্রতিনিধি পরিষদে প্রতিনিধির (যা জনসংখ্যার অনুপাতে) যোগফল মিলে।

ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি অনুযায়ী যেসব রাজ্যে জনসংখ্যা বেশি, সেসব রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোটও বেশি। এই প্রথা শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্যই ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য সব নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় সরাসরি মানুষের ভোটেই।

আমার বাঙলা/আরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মালয়েশিয়ার দূতাবাসে আটকে আছে মনিকার যোগদান

পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের আদেশের পরও মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগ দিতে পারছে...

গান বাংলার প্রধান নির্বাহী তাপস গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার হয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশন গান বাংলার প্...

৬ মাসে বিদেশ গেছেন ৫ লাখের বেশি কর্মী

সাধারণ ও শিল্প শ্রমে অভিবাসী বেশি, দক্ষ কর...

ট্রাম্প না কমলা, কে হাসবেন বিজয়ের হাসি?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এখন ঘণ্টার গণনায় পড়েছে। এ নির্বাচনকে নিয়ে...

ইরানের সেই তরুণী গ্রেপ্তারের পর কোথায় আছেন অজানা!

হিজাব ঠিকমতো পরা হয়নি বলে ইরনের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছিলে...

গুম কমিশনে ১৬০০ অভিযোগ জমা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমের ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত কমিশনে এ...

সাপ পথ চলতে আঁকাবাঁকা হয় কেন?

সাপ হাত-পা বিহীন দীর্ঘ শরীরের, মাংসাশী এক প্রকার সরীসৃপ। সোজা ও লম্বাটে ধূর্ত...

দুর্লভ তৈজসপত্রের ‘শাহজাহান সংগ্রহশালা’ 

যশোরের শার্শা উপজেলার নিজামপুর বাজারের সাইকেল মেকা...

অনেক দেশে সেনাবাহিনী নেই, নিরাপত্তা রক্ষা কীভাবে?

একটি দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেনাবা...

ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু, থাকছে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা 

প্রতি বছরের মতো এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা