কিছুদিন আগেই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বড় গলায় বলেছিলেন, আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাঁধতো না। এরপর আবার বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট হলে তাৎক্ষণিকভাবে এই যুদ্ধ থামিয়ে দেব।
৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প জিতে যান, তাহলে কি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থেমে যাবে?
২০২৩ সালে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র জাপোরিঝঝিয়ায় রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিলেন ইউক্রেনের সেনারা। আশা ছিল, ‘দখলদার’ রুশ সেনাদের হটাতে পারবেন তাঁরা। কিন্তু ইউক্রেনীয় সেনারা সামান্য বা বলতে গেলে কোনো সাফল্যই পাননি। তাতে তাঁদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা টিকিয়ে রাখাই দায় হয়ে পড়ে।
ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর-গ্রামে এখনো প্রতিদিন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও গ্লাইড বোমা হামলা চলছে, আর অব্যাহত রুশ হামলার শিকার হচ্ছেন ইউক্রেনীয় সেনারা।
এদিকে নির্বাচনে জিতলে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। তবে তিনি জিতলেও রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে তাঁর ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি জেতেন, সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা এখনকার তুলনায় কমে যেতে পারে। এ মুহূর্তে দেশটিতে এ সহায়তার পরিমাণ ৫০ ডলারের বেশি।
কমলা বা ট্রাম্প, যে-ই যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট হোন না কেন, ইউক্রেন সীমান্তে, এমনকি দেশটিতে বসবাসরত প্রত্যেকের ওপর গভীর প্রভাব পড়বে।
যদি কমলা বা ট্রাম্প ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে ও ফ্রন্টলাইন থেকে সরে যেতে বলেন, সে ক্ষেত্রে জাপোরিঝঝিয়ার মতো অঞ্চলগুলো হঠাৎ উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ভাগ হয়ে পড়তে পারে। যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে ১৯৫০–এর দশকে দুই কোরিয়া ও তাদের মিত্রদের লড়াই থামলেও এখনো কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটেনি।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাত মেটাতে ‘কিছু একটা বের করবেন’। যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া লাগতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের তরফে দ্বিতীয় যে বিকল্প গ্রহণ করা হতে পারে সেটি হলো, ইউক্রেনের ওপর থেকে সমর্থন পুরোপুরি প্রত্যাহার। ফলাফল হিসেবে, রুশ বাহিনী ক্রমেই তাদের কাঙ্ক্ষিত এলাকাগুলো, এমনকি একসময় গোটা ইউক্রেন দখল করে নিতে পারে।
এ কারণে ইউক্রেনবাসী নিশ্চিতভাবে কমলাকেই তাঁদের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। অবশ্য ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে মানুষের মধ্যে ক্রমেই ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন বাড়তে দেখা যাচ্ছে। তাঁরা চান, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের অনতিবিলম্বে অবসান। এ যুদ্ধ অবসানে ট্রাম্পের জেতা সবচেয়ে বড় সুযোগ বলে ধারণা তাঁদের।
আমার বাঙলা/ এসএ