স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। খবর বিবিসির
ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশে নিখোঁজদের অনুসন্ধান এবং জীবিতদের সহায়তা করার জন্য প্রায় ৫০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরা। এ ছাড়া অন্য দু’টি অঞ্চলে আরো তিনজন মারা গেছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বন্যায় মৃত মানুষের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার ভ্যালেন্সিয়ায় আট ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টির ফলে বন্যা শুরু হয়। স্পেনের আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, সাধারণত এক বছরে স্পেনজুড়ে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়, তার সমান হয়েছে ওই আট ঘণ্টায়। বিধ্বংসী এই বন্যার জন্য তারা জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন।
স্পেনের আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, স্মরণকালের ইতিহাসে ইউরোপে যত বিধ্বংসী বন্যা হয়েছে, সেসবের মধ্যে স্পেনের বন্যা অন্যতম। ১৯৭০ সালে রোমানিয়ায় বন্যায় ২০৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপর স্পেনে এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হলো।
স্পেনের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। দোকান, সুপারমার্কেট, স্কুল, গাড়ি সব শেষ।
তবে স্পেনের বিরোধী রাজনীতিবিদরা সরকারের সমালোচনা করছেন বলছেন, সরকার সঠিক সময়ে সতর্কবার্তা দেয়নি এবং উদ্ধার তৎপরতায়ও দেরি করেছে।
দেশটিতে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এখনো ঝুঁকির মুখে আছে বিভিন্ন এলাকা। এর মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নেই সুপেয় পানির সরবরাহ।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো, মানুষের জীবন বাঁচানো।’
বন্যায় ভেসে যায় বিভিন্ন সেতু, সড়ক ও ভবন। পানির তোড় থেকে বাঁচতে অনেক মানুষকে বাড়ির ছাদে উঠতে বা গাছ আঁকড়ে ধরতে দেখা যায়।
বন্যায় হতাহতের জন্য দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করা হয়েছে। বন্যায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্মানে গত বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আমারবাঙলা/আরইউ