আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সদস্য হওয়ার পথে ইউক্রেনের সঙ্গে ব্রাসেলসের আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হচ্ছে। রাশিয়ার হামলার মাঝেই কিছু সংস্কার শুরু করে ২০৩০ সালের আগেই সব পূর্বশর্ত পূরণ করতে চায় দেশটি।
প্রায় আড়াই বছর ধরে রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করে চলেছে ইউক্রেন। সে দেশের সরকার যুদ্ধ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে আগে থেকেই পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে।
সামরিক জোট ন্যাটোর পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্যও হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে ইউক্রেন।
নিজস্ব ভূখণ্ডের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাশিয়ার দখলে থাকায় এখনই ন্যাটো সদস্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে ইইউ সদস্য হওয়ার পথে যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে দেশটি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার হামলা শুরুর পরেই ইউক্রেন ইইউতে যোগদানের আবেদন করেছিল।
মঙ্গলবার ইইউ কমিশন ইউক্রেন ও মলদোভার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করেছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তিন দেশ লাটভিয়া, লিথুয়েনিয়া ও এস্টোনিয়া আগেই ইইউতে যোগ দিয়েছে।
এবার আরও দুটি দেশের সেই আবেদনের ভিত্তিতে জটিল প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জর্জিয়াও প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিগাল বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ ইউরোপ ও সব ইউরোপীয় দেশের অভিন্ন পথ থেকে ইউক্রেন কখনও বিচ্যুত হবে না।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লিয়েন এই সিদ্ধান্তকে ইউক্রেন, মলদোভা ও ইইউয়ের মানুষের জন্য অত্যন্ত ভালো খবর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সেই প্রক্রিয়া সুযোগে ভরা।
আবেদন থেকে শুরু করে ইইউতে যোগদানের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগোলেও মূল আলোচনা বহু বছর ধরে চলবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ইইউর মানদণ্ডের দিকে এগোতে ইউক্রেনকে এখনও অনেক সংস্কার চালাতে হবে। কঠিন সেই প্রক্রিয়ার সাফল্যের ওপর পূর্ণ সদস্যপদ নির্ভর করবে।
এছাড়া হাঙ্গেরির মতো রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সরকার ইউক্রেনের সদস্যপদের বিরোধিতা করে যেতে পারে। তবে যুদ্ধের মাঝেও ইউক্রেন বেশ কিছু ‘সাহসি’ সংস্কার শুরু করে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ইউক্রেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপ-প্রধানমন্ত্রী ওলগা স্টেফানিশনা ২০৩০ সালের মধ্যে সব পূর্বশর্ত পূরণ করে ইইউ সদস্য হওয়ার অঙ্গীকার করেন। তার আশা, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শেষে ২০২৫ সালেই সদস্য হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে ৩৫টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে।
বেশ কিছু বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নতুন সদস্য গ্রহণ করার প্রক্রিয়া কার্যত থেকে থাকলেও ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার পর বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে।
ফলে সার্বিয়া, মন্টেনেগ্রো, আলবেনিয়া ও উত্তর ম্যাসিডোনিয়াও কোনো এক সময়ে পূর্ণ সদস্য হয়ে উঠবে বলে আশা দেখা দিচ্ছে।
এবি/এইচএন