সংগৃহিত
আন্তর্জাতিক

গাজায় আগাসন, পাকিস্তানে জামায়াতের বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় আট মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।

এমন অবস্থায় পাকিস্তানে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। করাচিতে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। রোববার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে রোববার পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রধান সড়কে বিক্ষোভ করেছেন। দেশটির মূলধারার ধর্মীয় রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর (জেআই) আয়োজিত এই বিক্ষোভে হাজার হাজার নারী ও শিশুরাও অংশ নিয়েছিল।

মূলত ‘অল আইজ অন রাফাহ’ নামের বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।

আনাদোলু বলছে, পাকিস্তানে বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। আর এই তাপপ্রবাহের মধ্যেই ফিলিস্তিনি পতাকা ও ব্যানার নিয়ে এবং ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে বিক্ষোভকারীরা বিকেল ৪টায় করাচির শাহরাহ-ই-ফয়সাল রোডে জড়ো হতে শুরু করেন।

প্রতিবাদ-বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা অনেকেই ফিলিস্তিনি স্কার্ফ ‘কেফিয়েহ’ পরেছিলেন। এছাড়া সেখানে রাস্তার ওপরে থাকা একটি ব্রিজে প্রদর্শিত প্রধান ব্যানারে ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’ লেখা ছিল, অন্যটিতে লেখা ছিল ‘লাব্বাইক ইয়া আকসা’ (আকসা, আমরা এখানে) এবং ‘হামাসের প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রতি স্যালুট’।

এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে যারা মারা গেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৩০ মিটার লম্বা (প্রায় ১০০ ফুট) ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করেন একদল তরুণ বিক্ষোভকারী। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীও অংশ নেন।

আনাদোলু বলছে, গত প্রায় আট মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। আগ্রাসন শুরুর পর চলতি বছর পাকিস্তানের এই বাণিজ্যিক রাজধানীতে এ নিয়ে তৃতীয় বড় ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো। এছাড়া ইসরায়েলের আক্রমণের পরে পাকিস্তানে অন্যান্য অঞ্চলেও ব্যাপক প্রতিবাদ-সমাবেশ দেখা গেছে।

পাকিস্তান জামায়াতের নব-নির্বাচিত প্রধান হাফিজ নাঈম-উর-রেহমান তার ভাষণে বলেন, ‘ইসরায়েল মানবতাকে অপমান করছে। তার বাহিনী যেভাবে বোমাবর্ষণ করছে এমনকি সেইসব এলাকাতেও বোমাবর্ষণ করছে, যেগুলো নিজেরাই তথাকথিত নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছিল।’

তিনি ইসরায়েলের কাছে ‘সব ধরনের প্রাণঘাতী অস্ত্র’ সরবরাহ করে তেল আবিবকে রাফা আক্রমণ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘একদিকে, ওয়াশিংটন দাবি করছে- তারা যুদ্ধবিরতি চায় এবং অন্যদিকে, ইসরায়েলকে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র মারাত্মক অস্ত্র সরবরাহ করেই চলেছে।’

তিনি দাবি করেন, আরব নেতারা হামাস এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার পরিবর্তে ‘তাদের রাজ্য বাঁচানোর চেষ্টা করছেন’।

তিনি বলেন, ‘আমরা হামাস এবং ফিলিস্তিনিদের তাদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে একা ছেড়ে দেব না। পাকিস্তানের জনগণ, ‘বিবেকসম্পন্ন জনগণ’ মিলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই আক্রমণের ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং আরও ৮২ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বাসচাপায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ভালুকায় যাত্রীবা...

ই-ক্যাব নির্বাচনে পরিচালক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন টেকনিশিয়ান সিইও সৈকত 

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (...

বন্যার শঙ্কায় আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে চলতি বছরের আগস্ট মাসে বন্যার শঙ্কায়...

সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্...

সড়কে ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ব...

ব্যবসায়ী হত্যায় ১১ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক : জয়পুরহাটে আলী হাসান বাবু নামে এক ব্যবসায়ী...

ছবি নিয়ে বিপাকে সিয়াম

বিনোদন ডেস্ক : ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক সিয়াম আহমেদ। নিজের ভাইর...

প্রশ্নফাঁস হওয়ার বিষয় নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন শিক্ষাক্রমে একজন শিক্ষার্থীর নির্ধার...

কর্মবিরতিতে অচল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেনশন সংক্রান্ত ‘প্রত্যয় স্কিম&rsqu...

এলএনজি কিনবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ দ্রুত বৃদ্ধির...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা