আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে আটকে পড়া ১৪০ শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পাকিস্তান। শনিবার (১৮ মে) রাতে বিশকেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনার পর একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে দেশে ফেরেন এই শিক্ষার্থীরা। রোববার আরও অনেকে দেশে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১৩ মে একদল কয়েকজন কিরগিজ নাগরিকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান কয়েকজন মিশরীয় শিক্ষার্থী। ওই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে বিশকেকের বিভিন্ন হোস্টেলে থাকা বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বাসভবনে ঢুকেও হামলা চালানো হয়। সেসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয়রাও রয়েছেন।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি জানিয়েছেন, কিরগিজস্তান থেকে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইট লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। সহিংসতার পর যেসব পাকিস্তানি শিক্ষার্থী দেশে ফিরতে চান, তাদের জন্য এমন আরও ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
কিরগিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিশকেকে কিরগিজ নাগরিক ও একদল বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে ওই ঘটনার জেরে ব্যাপক সহিংসতা শুরু হয়।
সহিংসতা শুরুর পর পাকিস্তান সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিরগিজ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বিশকেকে অবস্থিত পাকিস্তানি দূতাবাস। সহিংসতায় আহত শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে সেখানকার একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কিরগিজস্তানে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হাসান জাইঘাম বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, শুক্রবার রাতে উগ্র স্থানীয় বাসিন্দারা বিশকেকের ছয়টি আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস ও ব্যক্তিগত বাসভবনে হামলা চালিয়েছেন। এতে পাকিস্তানের ১৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে ৪ পাকিস্তানি শিক্ষার্থী নিহত হওয়া তথ্যটি নিশ্চিত করতে পারেনি দূতাবাস।
এদিকে, এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। তিনি রাষ্ট্রদূত জাইঘামকে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারকে কাশ্মীরবিষয়ক মন্ত্রী আমির মুকামকে নিয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইটে বিশকেক যেতে বলেছেন। রোববার (১৯ মে) তারা বিশকেকের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন বলে জানা গেছে।
তাছাড়া যেসব শিক্ষার্থী পাকিস্তানে ফিরে আসতে চান, তাদের জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশও দিয়েছেন শাহবাজ শরিফ। এমনকি, এ বিষয়ে সব খরচ সরকার বহন করবে বলেও জানিয়েছেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। সূত্র: ডন
এবি/এইচএন