আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে সাঁজোয়া যান নিয়ে স্থল হামলা শুরু করেছে রাশিয়ার সেনারা। শুক্রবার (১০ মে) এই হামলায় বাহিনীটি সামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এর ফলে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন আরেকটি রণক্ষেত্রে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
শনিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতদিন রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের অঞ্চলগুলোতে অভিযান চালালেও খারকিভে স্থল অভিযান শুরুর মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও অভিযান চালানো শুরু করল আবারও। এরই মধ্যে রুশ বাহিনী খারকিভ শহরের দিকে বেশ খানিকটা এগিয়েও গেছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, খারকিভের সীমান্ত এলাকায় সামরিক শক্তি বাড়াতে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে। রুশ সেনারা বিমান ও কামান দিয়ে সীমান্ত শহর ভভচানস্কে হামলা চালিয়েছে।
কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘খারকিভের দিকে রাশিয়া নতুন হামলা শুরু করেছে। সেখানে এখন তুমুল লড়াই চলছে।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় যুদ্ধক্ষেত্রের নিয়মিত আপডেটে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানান, রাশিয়া সুমি-চেরনিহিভের কাছাকাছি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের কাছে খারকিভ শহরের উত্তরে সেনা সমাবেশ করেছে।
কিয়েভে সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া এই বসন্ত বা গ্রীষ্মে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। কিয়েভের বাহিনী শুক্রবারের হামলা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল, কিন্তু মস্কো ওই এলাকায় আরও সেনা পাঠাতে পারে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউক্রেনের একটি ঊর্ধ্বতন সামরিক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, রাশিয়ান বাহিনী ভভচানস্কের কাছে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে কিয়েভ বাহিনীকে ১ কিলোমিটার পেছনে ঠেলে দিয়েছে।
সূত্রটি বলেছে, রুশ বাহিনী একটি বাফার জোন তৈরির প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ইউক্রেনীয় সেনাদের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত পিছনে ঠেলে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছিল। কিন্তু কিয়েভের সেনারা তাদের আটকানোর চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, মস্কোর খারকিভ আক্রমণ ঠেকাতে কিয়েভের সঙ্গে ওয়াশিংটন নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
রয়টার্স বলছে, এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর খারকিভে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। পরে গত বছর ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের মুখে রুশরা পিছু হটতে থাকে। রুশ বাহিনী এবার আবারও খারকিভের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলো।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা অবশ্যই সম্ভব যে রুশরা খারকিভে আরও বড় হামলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।’
এদিকে ইউক্রেনের শীর্ষ কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন থেকেই বলে আসছেন, তারা বিশ্বাস করেন না যে, ১৩ লাখ মানুষের বাসস্থান খারকিভ শহর দখলের মতো একটি সফল অভিযান চালানোর জন্য রাশিয়ার শক্তি ক্ষমতা উপলব্ধ রয়েছে।
এবি/এইচএন