আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এবার সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিলো ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, ইসরায়েল যদি ফের ইরানে হামলা চালায় বা তেহরানের স্বার্থবিরোধী কাজ করে, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জবাব দেবো।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, ইসরায়েল যদি প্রতিশোধ নেয় ও ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাহলে তেহরানের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হবে কঠোর। ইসরায়েল ফের দুঃসাহস করলে, সর্বোচ্চ স্তরের প্রতিক্রিয়া দেখাতে আমাদের দেরি হবে না।
এনবিসি নিউজকে তিনি বলেছেন, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইসফাহানে ড্রোন হামলা হয়। ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ড্রোনগুলো ইসরায়েল নয়, বরং ‘অনুপ্রবেশকারীরা’ করেছে। ড্রোনগুলো ইরানের ভেতর থেকেই ছোড়া হয়েছে ও কয়েকশ মিটার উড়ে যাওয়ার পর সেগুলোকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, এগুলো ড্রোন নয়; খেলনার মতো কোনো বস্তু। এমন জিনিস দিয়ে আমাদের বাচ্চারা খেলাধুলা করে। আর আমরা এসবের সঙ্গে ইসরায়েলের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ এখনো পাইনি। বিষয়টির তদন্ত চলছে।
এদিকে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো ধরনের হামলা চালালে, ইসরায়েলকে তার ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। তাছাড়া এমন কিছু ঘটলে পারমাণবিক নীতিতেও পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে তেহরান।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির নিরাপত্তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা আইআরজিসির দাবি, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো ধরনের হামলা হলে, প্রয়োজনে পারমাণবিক নীতি পুনর্বিবেচনা করবে তেহরান। পাল্টা আঘাত হানা হবে ইসরায়েলের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে।
এরইমধ্যে তেল আবিবের গোপন ঘাঁটিগুলোর অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহেরও দাবি করেছে রেভ্যুলেশনারি গার্ড। যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়ার জন্য ইরান পুরোপুরি প্রস্তুত বলেও জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। এমন পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। না হলে এই সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে মোড় নিতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।
দামেস্কে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরপর শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইরানে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তেল আবিব ও তেহরানের মধ্যে এই উত্তেজনা চলছে। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা।
এবি/এইচএন