আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি সান ফ্রান্সিসকোয় আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন কনফারেন্সে উপস্থাপিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, তিব্বত মালভূমির নিচে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে।
ভূগর্ভস্থ টেকটোনিক প্লেটের এই নড়াচড়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে দুই খণ্ড হয়ে যেতে পারে গোটা তিব্বত। সে সময় ভয়াবহ ভূমিকম্প হতে পারে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা হতে প্রায় ৮-এর কাছাকাছি।
গবেষণায় আরো জানানো হয়েছে, ভূগর্ভস্থ টেকটোনিক প্লেট ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হিমালয় পর্বতমালার এভারেস্ট কোন শক্তির ফলে প্রায় তিন কোটি বছর আগে সৃষ্টি হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে বদলে যেতে পারে মানুষের প্রচলিত ধারণা।
এ সংক্রান্ত ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টু ডে'র এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার এই মডেলটি তৈরি করেছে চীনের ওশান ইউনিভার্সিটির ভূপদার্থবিদ লিন লিউয়ের নেতৃত্বাধীন একটি গবেষণা দল। এতদিন ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞানীরা জানতেন, ভারতীয় প্লেটটি আন্ডারপ্লেটিং প্রক্রিয়ায় ইউরেশীয় প্লেটের নিচে পিছলে ঢুকে যাচ্ছে।
তবে নতুন গবেষণায় দেখা যায়, ভারতীয় প্লেটের নিচের দিকের অংশ ইউরেশীয় প্লেটের নিচে ঢুকে গেলেও, তিব্বত এলাকায় এই প্লেটের ওপরের অংশগুলো ভয়াবহ সংঘর্ষের মুখে পড়ছে। আর এতে করে গোটা ভারতীয় প্লেটটি বেঁকে যাচ্ছে এবং ভেঙে দু’ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টু ডে'র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিব্বত মালভূমির নিচে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি আসলে ভেঙে দুই ভাগে হয়ে যাচ্ছে। আর এই ক্রমাগত সংঘর্ষের কারণে বিপর্যস্ত হচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের ওপরের অংশ।
গবেষণায় বলা হয়, সাবডাকশন প্রক্রিয়ায় মহাসাগরীয় টেকটোনিক প্লেট ভারী ও ঘন হয়ে তুলনায় হালকা মহাদেশীয় প্লেটের নিচে ঢুকে যাচ্ছে। লিন লিউ-এর নেতৃত্বাধীন গবেষণা দল আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ তিব্বতের ৯৪টি ব্রডব্যান্ড সিসমিক স্টেশন থেকে ‘আপ-অ্যান্ড-ডাউন’ এস-ওয়েভ এবং শিয়ার-ওয়েভ সংক্রান্ত তথ্যকে পি-ওয়েভ তথ্যের সঙ্গে একত্র করে ভূগর্ভস্থ প্লেটগুলোর গতির ছবি তৈরি করেছেন তারা। যে অঞ্চলে দুটি প্লেটে সংঘর্ষ হয়, সেই অঞ্চলে ভূমিকম্পের তরঙ্গ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। এই তরঙ্গগুলো ব্যবহার করে তারা ভারতীয় প্লেটের বর্তমান চিত্র তৈরি করেছেন।
এবি/এইচএন