আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অস্ট্রেলিয়া ‘গোল্ডেন ভিসা’ নামের যে বিশেষ ভিসা প্রকল্প চালু করেছিল, তা বাতিল করেছে দেশটির সরকার।
অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কয়েক বছর আগে প্রকল্পটি চালু করেছিল ক্যানবেরা। এই ভিসাধারীদের অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সরকারের আশা ছিল, এই প্রকল্প চালুর ফলে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে নতুন জোয়ার আসবে।
কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতেও সেই হতাশার আঁচ পাওয়া গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লার ও’নিল বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের দেশ এবং অর্থনীতির প্রয়োজনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।’
২০২২ সালে এই সিগনিফিকেন্ট ইনভেস্টর ভিসা (সিভ) নামের বিশেষ ভিসা প্রকল্প চালু করে অস্ট্রেলিয়ার সরকার, পরে এই প্রকল্প পরিচিতি পায় ‘গোল্ডেন ভিসা’ নামে। সে সময় ঘোষণা করা হয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ায় যেসব বিদেশি বিনিয়োগকারী কমপক্ষে ৫০ লাখ অস্ট্রেলীয় ডলার (৩৩ লাখ ডলার বা ২৬ লাখ ইউরো) বিনিয়োগ করেছেন বা শিগগিরই করতে ইচ্ছুক— তাদেরকে এই ভিসা প্রদান করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার প্রকল্প চালুর পর কয়েক হাজার সিভ বা গোল্ডেন ভিসা ইস্যু করে। সম্প্রতি সেই সব ভিসা এবং ভিসা ইস্যুর পর দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কিত একাধিক যাচাইয়ের পর দেখা গেছে, যে লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটি চালু করা হয়েছি, তা পূরণের ধারে কাছেও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
তাছাড়া এই প্রকল্পটির আওতায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও জানা গেছে। এমন অনেক ব্যক্তিকে এই ভিসা প্রদান করা হয়েছে, যারা বিনিয়োগকারী নন কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় ভবিষ্যতে তাদের বিনিয়োগের সম্ভাবনাও তেমন নেই।
সরকার এই দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে।
দুর্নীতি পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অস্ট্রেলীয় শাখা টিআএ’র শীর্ষ নির্বাহী ক্ল্যানসি মুর গোল্ডেন ভিসা বাতিলের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা গোল্ডেন ভিসা প্রকল্পটিকে নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধির মাধ্যম বানিয়ে ফেলেছিল। প্রকল্পটি বন্ধ করা এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু সরকারের একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। সূত্র : বিবিসি
এবি/এইচএন