আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে বিরল ও ভয়ঙ্কর এক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২ জনের। রোগের প্রতিরোধে দেশজুড়ে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড প্রিভেনশন। ইউএসএ টুডের এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, বিরল ওই ব্যাকটেরিয়ার নাম ভিব্রিও ভালনিফিকাস। এই ব্যাকটেরিয়াকে ‘মাংসখেকো’ ব্যাকটেরিয়াও বলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলের উষ্ণ ও লোনা পানিতে এটি পাওয়া গেছে। উপকূল থেকে আহরিত সীফুডেও এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সাধারণত পানিতে গোসল করতে নামলে এর সংক্রমণ ঘটে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কারও শরীরে ক্ষত থাকলে এবং তিনি যদি পানিতে নামেন, তাহলে খুব সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর অন্তত ৮০ হাজার মানুষ এই ভিব্রিও ভালনিফিকাস ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়।
ইউএসএ টুডের প্রতিবেদন মতে, চলতি বছর এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে এক ডজন মানুষ মারা গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া ত্বকে একটা ক্ষত তৈরি করে।
কখনও ফুলে গিয়ে ফুসকুড়ি ধরনের কিছু হয়। যা থেকে পরে আলসারও তৈরি হতে পারে। এতে আক্রান্ত হলে প্রবল জ্বর আসে। ডায়ারিয়া, পেটে ব্যথা ও বমি হয়। আক্রান্ত হলে প্রচণ্ড কষ্ট পেতে হয় রোগীকে।
গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ায় ভিব্রিও ভালনিকাসের প্রকোপ বাড়ছে। যেমনটা বলছেন ফ্রোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির হার্বার ব্রাঞ্চ ওসানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের গবেষক গ্যাবি বারবারিত। তিনি বলেন, ‘সাগরের পানি যতই উষ্ণ হয়, এই ব্যাকটেরিয়া তত দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে।’
জার্নাল ন্যাচার পোর্টফোলিও’র এক গবেষণা প্রতিবেদন মতে, ১৯৮৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরে ভিব্রিও ভালনিফিকাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যাকটেরিয়ায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এবি/ওশিন