আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করায় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অবরানকে এ সংক্রান্ত বৈঠক থেকে বের হয়ে যেতে হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইইউয়ের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে দিতে যাওয়া ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ইউরোর সহায়তা প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ইউক্রেনকে ইইউয়ের সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন জোটের সদস্য দেশগুলোর নেতারা। তবে যে বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেখানে নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়।
ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার বিষয়টি প্রস্তাব আকারে উত্থাপিত হলে মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পরে তিনি বৈঠক ছেড়ে চলে গেলে জোটের বাকি ২৬ সদস্য দেশ প্রস্তাবটিতে সম্মতি দেয়। অরবানকে আলোচনার টেবিল ছেড়ে চলে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ।
ওই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউক্রেনকে অর্থসহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আরেকটি বৈঠক হয়। সেখানে অরবান বলেন, আগামী চার বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়া যাবে না।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন অরবান নিজেই। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, আজ রাতের বৈঠকের সারমর্ম হলো, ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা সামনের বছর আবারও আলোচনার জন্য ইউরোপীয় কমিশনে যাব পর্যাপ্ত প্রস্তুতিসহ।
এদিকে, আলোচনা শুরু হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে ইউক্রেনের আরও কয়েক বছর লাগবে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্তের ফলে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান হলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমা বিশ্বের আরও কাছাকাছি এলো, যা ইউক্রেনকে মস্কোর নিয়ন্ত্রণ থেকে বের হতে কৌশলগতভাবে সহায়তা করবে।
এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো, যখন ইউক্রেনের বহুল আলোচিত পাল্টা আক্রমণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্ষরিক অর্থেই কোনো অগ্রগতি লাভে ব্যর্থ হয়েছে ও দেশটির সবচেয়ে বড় সহায়তাদাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে তহবিল সংকটে ভুগছে। সূত্র: গার্ডিয়ান
এবি/এইচএন