ইসলামের পবিত্রতম ভূমি সৌদি আরবে ১৪৪৬ হিজরি সালের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে দেশটিতে রবিবার (৩০ মার্চ) উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। দুই মসজিদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইনসাইড দ্য হারামাইন শনিবার (২৯ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে। চাঁদ দেখা যাওয়ায় এবার দেশটির মানুষ ২৯টি রোজা রাখলেন।
সৌদি আরবের রাজকীয় আদালত (রয়্যাল কোর্ট) শনিবার সন্ধ্যায় জানান, রবিবার ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে বলে ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্ট।
শনিবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থান থেকে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়। এরপর রবিবার ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে বলে ঘোষণা দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। কাল সকালে দেশজুড়ে ঈদের বিশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সৌদি আরবের বড় দুই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সুদাইর ও তুমাইরে সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের চাঁদের অনুসন্ধান শুরু হয়। এর আগে সুদাইর পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সৌদির প্রধান জ্যোতির্বিদ আব্দুল্লাহ আল-খুদাইরি বলেন, সুদাইর পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে শনিবার ৬টা ১২ মিনিটে সূর্যাস্ত যাবে এবং অর্ধচন্দ্র সূর্যাস্তের আট মিনিট পর অস্ত যাবে। দৃশ্যমানতার সময় দীর্ঘ অথবা ছোট হোক, যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে তাহলে চাঁদ দেখা সম্ভব।
পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ আল-আমার নামে অপর এক জ্যোতির্বিদ বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করছি সুদাইরে শনিবার আমরা চাঁদ দেখতে পাব।’ শেষ পর্যন্ত তাদের ধারণা ঠিক হয়।
এরআগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছিল, ২৯ মার্চ আরব ও ইসলামিক বিশ্বে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ ওইদিন সূর্যাস্তের আগে চাঁদ অস্ত যাবে এবং চাঁদ সূর্যের সংযোগ ঘটবে সূর্যাস্তের পর।
খালি চোখে, টেলিস্কোপে অথবা অন্য কোনো উপায়ে আগামী ২৯ মার্চ শাওয়াল বা ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা সম্ভব নয় বলেও দাবি করেছিল সংস্থাটি।
যেসব দেশ শুধুমাত্র চাঁদ দেখে ঈদ ও রমজানের তারিখ নির্ধারণ করে সেসব দেশে এবারের রমজান মাসটি ৩০ দিনের হতে যাচ্ছে। যার অর্থ মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি এবং ইসলামিক বিশ্বে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর পালিত হবে—গত ২০ মার্চ এমনই তথ্য জানিয়েছিল আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র। কিন্তু তাদের এসব ধারণা আংশিক ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ সৌদিতে ২৯তম দিনেই চাঁদ দেখা গেলো।
এদিকে কুয়েত, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতেও (ইউএই) রবিবার ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে বলে জানিয়েছে দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো।
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ওমান, ইরান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, অস্ট্রেলিয়াসহ আরো কিছু দেশে সোমবার ঈদ উদ্যাপিত হবে বলে জানিয়েছে দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো।
এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুসলমানরা ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করেন। এটি সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৯ বা ৩০ দিনে মাস হয়ে থাকে। ২৯ রমজান শেষে যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে পরদিন ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়। আর চাঁদ দেখা না গেলে ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয় ৩০ রমজান শেষে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ