সিগন্যালের গ্রুপ চ্যাটে সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্যরা। সেই চ্যাটে ছিলেন এক সাংবাদিকও। পরে সে তথ্য ফাঁস করেন তিনি।
সোমবার (২৪ মার্চ) ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, কর্মকর্তারা মার্কিন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করার গ্রুপ চ্যাটে ভুল করে এক সাংবাদিককে রেখেছিলেন। সাধারণত কোনো গ্রুপ চ্যাটে গোপন সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা হয় না।
সিগন্যাল মেসেজিং গ্রুপে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য ছাড়াও ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভান্স এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। সেই গ্রুপে দ্য অ্যাটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গকেও রাখা হয়েছিল। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন, এই গ্রুপ আসল হতেই পারে না।
ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, তিনি লিখেছেন, ‘আমার সন্দেহ ছিল এই টেক্সট গ্রুপটা আসল হতেই পারে না। কারণ, আমি ভাবতে পারিনি, জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন নেতৃত্ব সিগন্যালের মাধ্যমে কথা বলবেন। পরবর্তী সামরিক পরিকল্পনার কথা জানাবেন।’
এই গ্রুপ চ্যাটে ইয়েমেনে হুথিদের ওপর বিমান হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ফলে, বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই গোল্ডবার্গ জেনে গিয়েছিলেন, এই হামলা হতে চলেছে।
গত ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হুথিদের ওপর আক্রমণ চালায়। তার কয়েক ঘণ্টা আগে গোল্ডবার্গ গ্রুপে মেসেজ দেখেন, বিমান হামলা যাচ্ছে। গোল্ডবার্গের তখনো মনে হয়েছিল, এই গ্রুপটা ভুয়া। কিন্তু, যখন ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার খবর আসলো, তখন তিনি বুঝতে পারেন, এই গ্রুপ ভুয়া নয়।
তিনি লিখেছেন, ‘এরপর আমি সেই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসি।’
সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের মুখপাত্র ব্রেন হিউজেস বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গ্রুপের থ্রেড দেখে মনে হচ্ছে, এটা ঠিক গ্রুপ। আমরা দেখছি, কী করে ওই নম্বরটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ঢুকে গেছিল।’
তবে এ কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, জাতীয় সুরক্ষা টিম এবং জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের উপর ট্রাম্পের পূর্ণ আস্থা আছে।
হেগসেথ অবশ্য জানিয়েছেন, কোনো সামরিক পরিকল্পনার কথা গ্রুপে শেয়ার করা হয়নি। তিনি হাওয়াইতে বলেছেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, কেউই গ্রুপে সামরিক পরিকল্পনার কথা শেযার করেননি। গোল্ডবার্গ প্রতারক এবং সাংবাদিক হিসাবে তার কোনো সুনাম নেই।’
কিন্তু কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা পুরো ঘটনা নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। হাউসের অন্যতম প্রধান ডেমোক্র্যাট সদস্য হাকিম জেফরিস বলেছেন, কংগ্রেসের উচিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা এবং এই ধরনের ঘটনা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করা।
সশস্ত্র বাহিনী সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ডেমোক্র্যাট প্যাট রায়ান সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, ‘যদি রিপাবলিকানরা হাউসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করেন, তাহলে আমি নিজে থেকে এই আলোচনার উদ্যোগ নেবো।’
আমারবাঙলা/জিজি