সংগৃহীত
স্বাস্থ্য

ডায়ালাইসিসে মাসে খরচ ৪৬ হাজার টাকা : গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ‘আউট অব পকেট কস্ট অব কিডনি ডায়ালাইসিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়ালাইসিসের পেছনে একজন কিডনি রোগীকে মাসে সর্বনিম্ন ছয় হাজার ৬৯০ টাকা এবং সর্বোচ্চ দুই লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। গড় ব্যয় ৪৬ হাজার ৪২৬ টাকা।

বিআইডিএসের গবেষণা ফেলো আবদুর রাজ্জাক সরকার জানান, গবেষণাটিতে সরকারি, বেসরকারি ও বেসরকারি সংস্থাভিত্তিক (এনজিও) হাসপাতালের ৪৭৭ রোগীর ওপর জরিপ করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

জরিপে দেখা গেছে, একজন রোগীর ৩৫ শতাংশের মতো খরচ হয় ডায়ালাইসিস ফি বাবদ। প্রায় ২৩ শতাংশ ব্যয় হয় ওষুধ বাবদ। সব মিলিয়ে হাসপাতালে খরচ মোট ব্যয়ের প্রায় ৭৯ শতাংশ। অনানুষ্ঠানিক খরচ যেমন— যাতায়াত, খাবার, থাকা ইত্যাদির মধ্যে সবচেয়ে বেশি নয় শতাংশ ব্যয় হয় যাতায়াতে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন কিডনি রোগীর প্রতি মাসে আটটি ডায়ালাইসিসের দরকার হয়।

পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় ২০১৭ সাল থেকে ঢাকার জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) নিচতলায় বেসরকারিভাবে ডায়ালাইসিসসহ কিডনি রোগীদের বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘স্যানডর ডায়ালাইসিস সার্ভিসেস’। রোগীপ্রতি ডায়ালাইসিসের জন্য সরকারিভাবে প্রতি সেশনে ৫৩৫ টাকা এবং বেসরকারিভাবে দুই হাজার ৯৩৫ টাকা করা হয়েছে।

বিআইডিএসের গবেষণায় বলা হয়, প্রায় ৯২ দশমিক ৮৭ শতাংশ পরিবারই ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়ে। সাড়ে ১৯ শতাংশ রোগী প্রয়োজনের চেয়ে কম ডায়ালাইসিস করায়। হারটি গরিবদের মধ্যে বেশি। রোগীদের মধ্যে যারা কম ডায়ালাইসিস করায়, তারা কারণ হিসেবে (৯৫ শতাংশ) অনেক বেশি ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে কিডনি বিকল ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ, যারা ডায়ালিসিস নিয়ে বেঁচে আছে। তাদের একটি বড় অংশ অর্থের অভাবে সময়মতো ডায়ালাইসিস করাতে পারে না। মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করায় হচ্ছে নিদারুণ কষ্ট এবং অকালমৃত্যু।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ বলেন, ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর উপসর্গ দেখা দেয়। কিডনি যদি অকেজো হয়ে যায় তাহলে তা প্রতিস্থাপন ও ডায়ালাইসিস ছাড়া বাঁচার উপায় থাকে না। কিন্তু এই দুটি চিকিৎসাপদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ডায়ালাইসিস সেন্টারের সংখ্যা ১৬১। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই বেসরকারি। এসব সেন্টারের ৭০ শতাংশই ঢাকায়। বাংলাদেশে দুই কোটি রোগীর বিপরীতে নেফ্রোলজিস্ট মাত্র ২০০ জন, যা বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য খুবই অপ্রতুল।

বিআইডিএসের জরিপে দেখা যায়, ডায়ালাইসিস সেবা নিতে রোগীদের ৪২ দশমিক ৫৬ শতাংশ যায় এনজিওভিত্তিক হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালে যায় প্রায় ৩৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বেসরকারি হাসপাতালে যায় ২৩ দশমিক নয় শতাংশ রোগী। ব্যয় বেশি বেসরকারি হাসপাতালে, মাসে গড়ে খরচ ৭৭ হাজার ৫৮৯ টাকা। সরকারিতে তা ৩২ হাজার ৫৫২ টাকা এবং এনজিওভিত্তিক হাসপাতালে ৩৯ হাজার ৯১২ টাকা।

ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. শওকত আলম জানান, বাংলাদেশে ১৯৮২ সালে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হলেও দ্বিতীয় প্রতিস্থাপনটি হয় ১৯৮৮ সালে। এ পর্যন্ত তিন হাজারের কিছু বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

ডা. শওকত বলেন, দেশে প্রতিবছর পাঁচ হাজার মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩৬৫ জনের, যা প্রয়োজনের মাত্র সাত দশমিক তিন শতাংশ। তা ছাড়া আমাদের দেশে কিডনিদাতার যেমন প্রকট সংকট, তেমনি আইনি জটিলতাও রয়েছে।

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

স্ত্রীসহ জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নুর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

জাতীয় পার্টির মহাসচিব, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্র...

জাতিসংঘ মিশনে যেতে পারবেন না র‌্যাব, ডিজিএফআই বা ডিবি সদস্য

যেসব সামরিক বা পুলিশ সদস্য র্যাব, ডিজিএফআই বা ঢাকা...

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে সরে গেলেন স্টার্ক

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মিচেল স্টা...

‘চুট্টমাল্লে’ গান গেয়ে এড শিরানের চমক

'দেবরা' সিনেমার তেলেগু ভাষার জনপ্রিয় গান &...

গাজার ২ হাজার অসুস্থ শিশুকে আশ্রয় দেবে জর্ডান

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার ২ হাজার অসুস্থ শিশুকে জর্ডানে আশ্রয় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছ...

জলকামানের পানি ছিটিয়ে শাহবাগ মোড় থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিলো পুলিশ

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে ল...

বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে মার্কেট দখলের অভিযোগ

গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া মধ্যপাড়া এলাকায় বিএনপির এক নেতার নেতৃত্বে...

কাফির বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা

নুরুজ্জামান কাফির বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বু...

‘ম্যাডাম আমার বই যত্নে রাখবেন’ বলা মরিয়মের আর ক্লাসে ফেরা হলো না

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের পূর্ব সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে বিদ্যুৎস্...

দলগত অপরাধ প্রমাণ হলে দলের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া যায়: চিফ প্রসিকিউটর

দলগতভাবে কোনো অপরাধ প্রমাণিত হলে সেই দলের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যায় বলে মন...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা