গাইবান্ধা প্রতিনিধি: ফুলের এলাকা হিসেবে পরিচিতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অর্ধযুগ ধরে ফুলচাষ করছে কৃষকরা। সারা বছরের ফসল হিসেবে ফুল বিক্রয়ের অন্যতম মাস ফেব্রুয়ারি।
এ মাসে রোজ ডে থেকে শুরু করে উদযাপিত হয় ভালোবাসা দিবস। এ মাসে রয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এসব দিবসগুলোতে বেড়ে যায় হরেক ফুলের চাহিদা। ফুলপ্রেমীদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ গুণ আয়ের স্বপ্ন দেখছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
সাদুল্লাপুর উপজেলার কাঁঠাল লক্ষীপুর, আমবাগান, তাজনগর, খোর্দ্দ কোমরপুর, রাঘবেন্দপুর, পশ্চিম দামোদরপুর ও চকনদীসহ বিভিন্ন মাঠে দেখা যায় ফুল চাষিদের ব্যস্ততা।
এসব এলাকায় দিগন্তজুড়ে নজর কাড়ছে হরেক ফুলের সমাহার। ওইসব এলাকা ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে। আসছে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন দিবস। এ উপলক্ষে চাষিদের খেতে শোভাবর্ধনে দুলছে হরেক রকম ফুল। ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়।
জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হচ্ছে নানা ধরণের ফুল। বিশেষ করে ইদিলপুর ইউনিয়নের তাজনগরসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠ এখন অর্থকরী ফসল হিসেবে গোলাপ, গ্লাডিওলাস ও গাঁদাসহ অন্যান্য ফুলচাষ করা হচ্ছে।
সারা বছরের ফসল হিসেবে বেশ লাভজনক হওয়ায় ফুলচাষেই অধিক মাত্রায় ঝুঁকে পড়ছে এলাকার কৃষক।
উপজেলার চকনদী গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, দেড় বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের গোলাপ, গ্লাডিওলাস, গাঁদা ফুল চাষ করছি। ৩ বছর ধরে ফুলচাষে অর্থনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট স্বাবলম্বী হয়ে উঠছি। ফলে আগামী বছর নতুন করে আরও বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তিনি।
তাজনগর গ্রামের কৃষক শাহীন মিয়া ফুল উৎপাদন করে আসছেন কয়েক বছর ধরে। নিজ জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল উৎপাদন করছে তিনি।
উৎপাদিত ফুলের মধ্যে রয়েছে- রজনীগন্ধা, ডালিয়া, গোলাপ, সূর্যমুখী, গাঁদা, জারবারা (ইন্ডিয়া)। ফুলচাষ থেকে লাভবান হয়েছে তিনি। তার এ সাফল্যে গ্রামের অন্যান্য কৃষকরাও চলতি বছর ফুলচাষ করেছে।
কাঁঠাল লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আরিফ মিয়া নামের ফুলচাষি বলেন, সাধারণত একটি গোলাপ ১০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রয় করা হয়। ব্যবসায়ীরা প্রতিটি ১২ থেকে ১৫ টাকা মূল্যে বিক্রয় করেন।
তবে বিশেষ মৌসুমে যেমন- ফেব্রুয়ারি মাসের প্রপোজ ডে, ভালবাসা দিবস, মাতৃভাষা দিবসসহ, বিভিন্ন দিবসে একটি গোলাপ বাগান থেকেই বিক্রয় হয় ১৫ টাকায়। দোকানে খুচরা বিক্রয় হয় ১৯-২০ টাকা দরে। চলতি মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ফুল বিক্রয় করে ৩ গুণ লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
সাদুল্লপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ফুলের চাষ হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক লাভ করতে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, উপজেলায় প্রায় ২ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। এলাকার মাটি ফুলচাষে অত্যন্ত উপযোগী। এ কারণে বেশি ফলন পাওয়ায় ফুলচাষ করে যথেষ্ট লাভবান হচ্ছে কৃষক। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দিবসকে সামনে রেখে কৃষকরা ম্যাকিং করা শুরু করেছে।
এবি/ এইচএন