ছাপান্ন হাজার বর্গ মাইলের এই দেশে প্রাণের শহর ঢাকা। একদিকে যেমন আছে জীবিকার তাগিদে ব্যস্ততা অন্যদিকে আছে অফুরন্ত প্রেম। সপ্তদশ শতাব্দীতে ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলের সময় এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিলো।
বিয়ের আগে বা বিয়ের পরে যুগলদের ঘোরাঘুরির জন্য ঢাকা খুব উপযুক্ত শহর নয়। এখানে নিরিবিলি জায়গার বেশ অভাব। তবে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে ঘুরতে পারলে ঢাকা শহরের এক দিনের প্রেম হবে জমে ক্ষীর। টানা একদিন ঢাকার শহরে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরতে চাইলে শুরু করা যেতে পারে পুরান ঢাকা থেকে।
খাবার-দাবারের জন্য পুরান ঢাকায় রয়েছে বেশ কিছু জায়গা। জনসন রোডের মানিক সুইটমিটের দই-চিড়া খেয়ে ঘুরতে যাওয়া যেতে পারে হোসেনি দালানে। দই-চিড়ায় অরুচি থাকলে শাখারীবাজারের অমূল্য মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের হালুয়া ও পরাটা খাওয়ালে সঙ্গীর মনটা সকাল-সকাল বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠবে।
এসবের বাইরে আছে পুরান ঢাকার আদি খাবার বাকরখানি। বাকরখানি খেয়ে হোসেনি দালানের দক্ষিণের পুকুরপাড়ে বসলে প্রেমের সময়টা হয়ে উঠবে মধুর। দুপুর নেমে এলে সঙ্গীকে কে নিয়ে চলে যাওয়া যেতে পারে যান পুরান ঢাকার আল রাজ্জাক হোটেলে। সেখানে মিলবে কাচ্চি। কাচ্চি খেতে না চাইলেও সমস্যা নেই। আছে নাজিরাবাজারের বিখ্যাত হাজির বিরিয়ানি।
তৈলাক্ত বিরিয়ানি এড়িয়ে চলতে চাইলে চাঁনখারপুলের নীরব হোটেলের গরুর মাংস ভুনা ও ভাত খাওয়া যেতে পারে। ঘোরাঘুরির করা যেতে পারে গোপীবাগের রোজ গার্ডেনে। সেখানে সঙ্গীর সঙ্গে বিকেল পর্যন্ত বসে ভবিষ্যতের পরিকল্পনাটা সেরে নেওয়া যাবে কোনো ঝঞ্ঝাট ছাড়াই।
দুপুরের খাবারের পর যদি কোমল পানিয় খেতে ইচ্ছা করে তাবে আছে পুরান ঢাকা বিখ্যাত লাচ্ছি। নারিন্দায় পাওয়া যেতে পারে সৌরভের মাঠা। কিংবা রায়সাহেব বাজারের মিলবে বিউটির লাচ্ছি। ঠাটারীবাজারে গিয়ে পান করা যেতে পারে স্টারের ফালুদা অথবা তারা মসজিদের সামনের শরবত। বিকেলে পুরান ঢাকায় প্রেমের জন্যে হাতিরঝিলকে আদর্শ জায়গা বলা যেতে পারে।
অনেকে অবশ্য চন্দ্রিমা উদ্যানেও যান। সিনেমা দেখেও সময়টা উপভোগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টার তো আছেই। প্রেমের জন্য পুরান ঢাকা ছাড়াও আছে নতুন ঢাকার ধানমন্ডি পার্ক কিংবা মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেন। সে ক্ষেত্রে রাতের খাবার সারা যেতে পারে সাতমসজিদ রডের কোনো এক রেস্তোরাঁয়।
তা ছাড়া মিরপুরের ডিওএইচএস, কালশী ও ভাটারাতে কিছু রেস্তোরাঁ রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়।১৯৭১ সালে ঢাকা "স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী" ঘোষিত হয়।