টানা দ্বিতীয়দিনের মতো বায়ুদূষণে বিশ্বের শহরগুলোকে পেছনে ফেলে শীর্ষে ওঠে এসেছে ঢাকা। আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের রাজধানী শহরটির বায়ুমান ২৪১। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকা প্রথম অবস্থানেই ছিল। তবে আজ দূষণের মাত্রা একটু কমেছে। সোমবার ঢাকার বায়ুমান ছিল ২৭৯।
বায়ুদূষণের দিক থেকে কিছুদিন আগেও প্রথম দুটি স্থান নিজেদের করে নেওয়া পাকিস্তানের লাহোর এবং ভারতের দিল্লির অবস্থান যথাক্রমে দুই এবং চারে। এ ছাড়া শীর্ষ পাঁচ শহরের মধ্যে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয় এবং ভারতের কলকাতা।
আজ সকাল ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার থেকে এ তথ্য জানা যায়। বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে থাকা ঢাকার আজকের বাতাসের মান নাগরিকদের জন্য খুব অস্বাস্থ্যকর। পাশাপাশি তালিকায় দুই নম্বরে ২১৯ স্কোর নিয়ে আছে পাকিস্তানের লাহোর শহর। অর্থাৎ এখানকার বাতাসের মানও নাগরিকদের জন্য খুব অস্বাস্থ্যকর। এ ছাড়া ১৯৪ স্কোর নিয়ে ভিয়েতনাম হ্যানয় শহর তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোর মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। অন্যদিকে, স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্যসমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ