নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে টানা তীব্র তাপপ্রবাহের পর সারা দেশে স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে। কোথাও কোথাও বজ্রসহ কালবৈশাখীর তাণ্ডব চলছে। এ অবস্থায় গত ২/৩ দিনে তাপমাত্রা কমে গেছে। প্রশমিত হচ্ছে উত্তাপের দাপট।
এক শ্বাসরুদ্ধকর গরম থেকে মানুষ কিছুটা প্রশান্তি বোধ করছে। খুলে দেয়া হয়েছে স্কুল, কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বেড়েছে। এতে প্রাণহানিসহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাকা ধান।
জানা গেছে, গতকাল খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, জামালপুরের ইসলামপুর, সিলেটের গোয়াইনঘাট ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাটে বজ্রপাতে করম আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ছৈলাখেল ৮ম খন্ড গ্রামের মৃত আফসর উদ্দিনের ছেলে। এছাড়া মৌলভীবাজারে সদর উপজেলার আপার কাগাবাল ইউনিয়নের পুদিনাপুর গ্রামে বজ্রপাতে আবদুল হাই নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে আগামী ৭২ ঘণ্টা দেশের ৮ বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, আজ থেকে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড়। এতে যেসব জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল সেগুলো প্রশমিত হবে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, বুধবার (৮ মে) বিকেল ৪টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দমকা বা ঝোড়ো বাতাসসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানান, আজ থেকে পরবর্তী ৭ দিন সব বিভাগেই ঝড়বৃষ্টি থাকতে পারে। তবে পশ্চিমাংশে বৃষ্টি কিছুটা কম থাকতে পারে।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড় ও তীব্র বজ্রপাত ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। আগামী ৩ দিন এ অবস্থা চলবে। আগামী ১৪ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বাড়বে।
গতকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে। মঙ্গলবার (৭ মে) পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জেলা, মেঘালয় রাজ্য ও পূর্ব আসামের ৩ জেলায় তীব্র বজ্রপাতসহ ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার (৬ মে) থেকে সিলেট বিভাগের নদনদীগুলোর উপকূলবর্তী এলাকাগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
এবি/এইচএন