জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী চিত্রপরিচালক জাহিদুর রহিম অঞ্জন আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে আটটায় ভারতের বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ভাই, এক বোন ও অসংখ্য বন্ধু–স্বজন রেখে গেছেন। সাহিত্যিক শাহীন আখতার তার স্ত্রী। জাহিদুর রহিম অঞ্জন ভাষাসৈনিক মিজানুর রহিমের সন্তান।
জাহিদুর রহিম অঞ্জনের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন তার ছোট ভাই সাজ্জাদুর রহিম। তিনি জানান, তার ভাই চার মাস আগে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য ভারতে যান। জানুয়ারি থেকে তিনি বেঙ্গালুরুতে ছিলেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি অপারেশন করা হয়৷ মূলত অপারেশন–পরবর্তী জটিলতায় তিনি মারা যান।
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে লিভারের জটিলতায় ভুগছিলেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। কয়েক মাস ধরে বেঙ্গালুরুর স্পর্শ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। গত সপ্তাহেই তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ছিলেন লাইফ সাপোর্টে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই গুণী নির্মাতা।
কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘রেইনকোট’ গল্প অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘মেঘমল্লার’ নির্মাণ করেন অঞ্জন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মুক্তি পায় সিনেমাটি। এটি ছিল তার প্রথম ফিচার ফিল্ম। প্রথম ছবির জন্যই তিনি ‘শ্রেষ্ঠ পরিচালক’ ও ‘শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
সরকারি অনুদানে সর্বশেষ তিনি নির্মাণ করেন ‘চাঁদের অমাবস্যা’। শুটিং সম্পন্ন করে গত বছরেই সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা থাকলেও দেশের সার্বিক অবস্থা এবং নিজের অসুস্থতার কারণে মুক্তি দিতে পারেননি।
তবে শিগগিরই সিনেমাটি দর্শকদের সামনে নিয়ে আসতে আগ্রহী ছিলেন। প্রকাশ করেছিলেন সিনেমার পোস্টারও! অঞ্জন ভারতের পুনে ফিল্ম ইন্সটিটিউটে চলচ্চিত্র বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। তিনি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করতেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনকর্মী, শর্টফিল্ম ফোরামের সাবেক সভাপতি ও চলচ্চিত্র শিক্ষকের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক ও স্মৃতিচারণা করছেন চলচ্চিত্রের সহকর্মী থেকে শুরু করে অগণিত মানুষ। শোক জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, আকরাম খানসহ অনেকে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ