দীর্ঘ ২৯ বছরের সংসার ভাঙছে খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ, অস্কারজয়ী এ আর রহমানের। প্রায় তিন দশকের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছেন এ আর রহমানের স্ত্রী সায়রা বানু। সায়রার আইনজীবী বন্দনা শাহ ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন। তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে ওই আইনজীবী জানান, তিক্ত সম্পর্কের জের ধরেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সায়রা। সেই সিদ্ধান্তে দুজনার সম্মতি রয়েছে।
বন্দনা শাহ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। যদিও দুজনই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার অনেক চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত সেটি আর সম্ভব হয়নি। সিদ্ধান্ত নিতে যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে দুজনার, কিন্তু সায়রার সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।
এ আর রহমানের বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার ভক্তরা।
সায়রার আইনজীবী অনুরোধ করেছেন, এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে কেউ যেন সায়রাকে বিব্রত না করেন। তিনি মানসিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, দীর্ঘ দাম্পত্যে ইতি টানা কোনো সহজ বিষয় নয়।
এদিকে সায়রা বানু বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেও সহজ ছিল না। অনেক ব্যথা ও যন্ত্রণা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সায়রা বানু এই কঠিন সময়ে সকলের কাছে গোপনীয়তা রক্ষার এবং তাদেরকে একান্তে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
অন্যদিকে এ আর রহমান ও সায়রার ছেলে আমিন ইনস্টাগ্রামে দেওয়া একটি পোস্টে লিখেছেন, এই সময়টিতে সবার কাছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা চাইছি।
এ আর রহমান জানান, তাদের আশা ছিল বিয়ের ৩০ বছর উদযাপন করবেন। কিন্তু সেটি হলো না।
১৯৯৫ সালে সায়রা বানুকে বিয়ে করেন এ আর রহমান। তাদের তিন সন্তান, খতিজা, রহিমা ও আমিন। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে রহমান স্বীকার করেছিলেন, স্ত্রী সায়রার সঙ্গে তার সাংস্কৃতিক মতপার্থক্য রয়েছে। যদিও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তারা বিষয়টি সামলে চলেন। ২৯ বছর বয়সে সায়রাকে বিয়ে করেছিলেন রহমান। আজ ২৯ বছর পর ভাঙতে যাচ্ছে তাদের সংসার।
এ আর রহমান ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী। ১১ বছর বয়স থেকে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার বিভিন্ন সুরকারের সঙ্গে বাজাতে শুরু করেন রহমান। ঘটনাচক্রে ব্যক্তি জীবনেও ধর্ম বদলান রহমান। ২৩ বছর বয়সে সপরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। তার নাম ছিল দিলীপ কুমার। ১৯৯২ সালে তামিল ছবি ‘রোজা’ দিয়ে সুরকার হিসেবে তার যাত্রা। পরে ১৯৯৫ সালে রাম গোপাল ভার্মার ‘রঙ্গলীলা’তে সঙ্গীত পরিচালনা করে তিনি শুরু করেন বলিউড যাত্রা ।
তিনি দেশটির জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার অস্কার, গ্র্যামি, গোল্ডেন গ্লোব অর্জন করেছেন। ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করেছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ