সাজু আহমেদ: কমলগঞ্জের ঘোড়ামারা গ্রামে মণিপুরি থিয়েটারের যে নটমণ্ডপে ‘কহে বীরাঙ্গনা’ দর্শনীর বিনিময়ে নাট্যপ্রদর্শনীর শুরু হয়েছিল সেই নটমণ্ডপেই এবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে নাটকটির ১০১তম মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে।
আয়োজক কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে, ঢাকায় শততম প্রদর্শনীর পর আগামী ১৬ জুন রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির ১০১তম বিশেষ প্রদর্শনী হবে। প্রদর্শনী শেষে থাকবে দর্শক-কলাকুশলী মুক্ত আড্ডা। মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ অবলম্বনে রচিত নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন শুভাশিস সিনহা। নাটকে রূপায়িত চার নারীচরিত্রে একক অভিনয় করেছেন জ্যোতি সিনহা।
এছাড়া নাটকের মঞ্চে ভাবমুদ্রা রূপায়নে থাকবেন স্বর্ণালী সিনহা, শ্যামলী সিনহা, ভাগ্যলক্ষ্মী সিনহা, অর্থী সিনহা, মৌমিতা সিনহা, শুক্লা সিনহাসহ অনেকেই। সংগীতে শর্মিলা সিনহা, বাদ্যে বাবুচান সিংহ, বিধান চন্দ্র সিংহ, অঞ্জনা সিনহা, বিধান সিংহ, সমরজিৎ সিংহ প্রমুখ।
মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় আপন, সুশান্ত, দেব, সমরজিৎ, সৌরভ, সৌম্য প্রমুখ। নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনায় সজলকান্তি সিংহ ও আলী আহমেদ মুকুল। আলোক প্রক্ষেপণে মো. শাহজাহান। পোস্টার করেছেন উত্তম কুমার সিংহ।
‘কহে বীরাঙ্গনা’ নাটকে চার পৌরাণিক চরিত্র-শকুন্তলা-দ্রৌপদী-দুঃশলা-জনার প্রেম-বিরহ-ঈর্ষা-বেদনা-ক্ষোভ-দ্রোহের মধ্য দিয়ে নারীর বহুমাত্রিক রূপের নান্দনিক প্রকাশ করা হয়েছে। যুদ্ধ নয়, প্রেমেই মানুষের মুক্তি, এটিই এ নাটকের মূলকথা। যে কোনো থিয়েটার দলের জন্য কোনো প্রযোজনার শত প্রদশর্নী করতে পারা দারুণ আনন্দের। আর সেই প্রদশর্নীগুলো যদি গ্রাম থেকে শুরু করে শহরে জাতীয়-আন্তর্জাতিক পরিসরে এবং দেশের বাইরেও প্রায়শই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, প্রশংসা অর্জন করে, তা অন্যরকম ভালো লাগাদ্রতরি করে। ‘কহে বীরাঙ্গনা’র ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে।
২০১০ সালের ২৪ ডিসেম্বর কমলগঞ্জের ঘোড়ামারা গ্রামে মণিপুরি থিয়েটারের নিজস্ব থিয়েটার স্টুডিও নটমণ্ডপে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। শুরুতেই চারটি শোতে নাটকটি প্রত্যন্ত গ্রাম-এলাকার মিলনায়তনপূর্ণ দর্শকের মন জয় করে নেয়। তারপর একে এক জেলা শহরে, বিভাগীয় শহরে, ঢাকায়, দেশের নানা শহরে, মফস্বলে আয়োজিত বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক উৎসবে আমন্ত্রিত হয়ে নাটকটি দর্শকদের ব্যাপক সমীহ ও ভালোবাসা অর্জন করে।
এছাড়াও ভারতের আসাম-ত্রিপুরা ও কলকাতায় অনীক থিয়েটার ও টাইমস অফ ইন্ডিয়ার আমন্ত্রণে প্রদর্শিত হয়ে অর্জন করে ভূয়সী প্রশংসা। অভিনয়ের ক্ষেত্রে শরীর-বচন-মুদ্রা-সংগীত-অভিব্যক্তি সবকিছুকে একাত্ম করে এক ধরনের এনার্জেটিক ও অর্গানিক ইউনিটির অভিনয়রীতি এ নাটকে ধারণ করা গেছে, দেশজ হয়েও যাদ্রবশ্বিক, জ্যোতি সিনহা যার অনুপুঙ্খ রূপায়ণকারী।
সেরা মঞ্চনাটক হিসেবে ২০১২ সালে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) প্রদত্ত আব্দুল জব্বার খান পদক অর্জন করে ‘কহে বীরাঙ্গনা’। ১০১তম প্রদর্শনীর জন্য টিকেটমূল্য রাখা হয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে - ৫০/১০০/৩০০/৫০০ টাকা। শিক্ষার্থী ও গ্রামের মহিলাদের জন্য ২০ টাকার সীমিত টিকেট রয়েছে। রয়েছে ৩০০ টাকা মূল্যের চমৎকার স্মারক টি-শার্ট।
তবে ৩০০ বা ৫০০টাকার টিকেট কিনলে টি-শার্টটি ফ্রি উপহার দেয়া হবে। টিকেট শো’র আগে কাউন্টারে পাওয়া যাবে। তবে অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য-০১৭২২০৭৫৩০২ (বিকাশ)-শুভাশিস সিনহা মণিপুরি থিয়েটার ০১৭১৬৫৭৮৩০৩
এবি/এইচএন