সাজু আহমেদ: সহিদ রাহমানের ‘মহামানবের দেশে’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মাণ হচ্ছে বিশেষ টেলিফিল্ম ‘ক্যাপ্টেন কামাল’। এ উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় মতিঝিল কিচেন ইয়ার্ড রেস্টুরেন্ট চুক্তিপত্র স্বাক্ষর ও পোস্টার উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফুয়াদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহা: শেখ শহীদ উল্লাহ, নির্মাতা সতীর্থ রহমান, মেহেদি হক রনি, অভিনেতা ক্রিস্তিয়ানো তন্ময়, রোদেলা সুভাষিনী টাপুরসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাহিত্যিক ও নাট্যকার সহিদ রাহমান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে নির্মমভাবে ঘাতকের বুলেটে নিহত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামাল। তাঁর উপর নির্মাণ হবে ‘মহামানবের দেশে’ উপন্যাস অবলম্বনে টেলিফিল্ম ‘ক্যাপ্টেন কামাল’। ৬০ মিনিট ব্যাপ্তিকালের এই টেলিফিল্মের গল্প, কাহিনি ও চিত্রনাট্য সহিদ রাহমান। নির্মাতা মেহেদী হক রনি, অভিনয়শিল্পীরা হলেন ক্রিস্তিয়ানো তন্ময়, রোদেলা সুভাষিনী টাপুর, ডলি জহুর, গাজী রাকায়েত, ফজলুর রহমান বাবুসহ প্রমুখ। ফ্রেম ফ্যাক্টরি নিবেদিত প্রযোজনা অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
টেলিফিল্মের কাহিনিতে দেখা যাবে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ। দেশের মানুষ নতুন করে জীবনযাপন শুরু করছে। শেখ কামালও ফিরে এসেছেন দেশে। চারদিকে তার নামডাক ছড়িয়ে গেছে নানামাত্রিক সৃজনশীল কর্মকান্ডের জন্য। সেতার বাজানো থেকে শুরু করে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, আবৃত্তি, মঞ্চনাটকে অভিনয়সহ নানাবিধ সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত শেখ কামাল। এমন চৌকস একজন তরুণের সাক্ষাৎকার নেয়ার দায়িত্ব আসে সাংবাদিক আজাদের কাছে। আজাদও তরুণ সাংবাদিক। ১৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অপেক্ষা করছেন সাংবাদিক আজাদ। শেখ কামাল এলে আজাদ তার এসাইনমেন্টের কথা জানালেন। শেখ কামাল ইতস্তত করে রাজি হলেন। সাংবাদিক আজাদ সারাদিন শেখ কামালের সাথে থাকলেন, খুব কাছ থেকে দেখলেন শেখ কামালকে। শেখ কামাল জানালেন দেশের খেলাধুলা, সংস্কৃতি ও শিক্ষা নিয়ে স্বপ্নের কথা। আজাদ আরো কিছু জানতে চায়। শেখ কামাল জানালেন ১৪ আগস্ট সারাদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই থাকবেন। কারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্র- শিক্ষদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে আসবেন ১৫ আগস্ট সকাল ১০টায়, তাই নানা কর্মকান্ডের তদারকির জন্য শেখ কামাল ব্যস্তদিন পার করছে। আগামীকাল এলে বাকি কথা হবে। সকালে স্ত্রী খুকিকে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন শেখ কামাল। তারপর স্ত্রীকে বিদায় দিয়ে নেমে পড়েন কাজে। নাটকের রিহার্সাল, আবৃত্তির আয়োজন, গানের মহড়া, স্টেজ বানানো- সবখানেই শেখ কামালের অংশগ্রহণ। সাংবাদিক আজাদ মনোযোগ দিয়ে শেখ কামালের কার্যক্রম দেখেন মুগ্ধ চোখে ছবি তোলেন, কথা বলে তা লেখেন ডায়রিতে। প্রয়োজনীয় কাজ শেষ হলে আজাদ বিদায় নিয়ে চলে যায়। নাটকের রিহার্সাল শেষে ফাইনাল মিটিং- অনেক রাত হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি সেলিমের থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে রওয়ানা দেয় শেখ কামাল। সকালে যখন সহপাঠি ও অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা মঞ্চের দিকে এগিয়ে আসে অনুষ্ঠান শুরুর জন্য তখন রেডিওতে খবর জানায় শেখ কামালসহ বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার কিছু ঘাতকের বুলেটে নিহত হয়েছে। মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় প্রাণ চঞ্চল উৎসবের স্থান। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সহযাত্রীরা। শূন্য হয়ে পড়ে থাকে অনুষ্ঠানের মঞ্চ। এভাবেই এগিয়ে যায় কাহিনি।