বিনোদন ডেস্ক: ওয়ালিদ আহমেদের পরিচালনায় ‘মেঘের কপাট’ চলতি বছরের অন্যতম আলোচিত চলচ্চিত্র , চলচ্চিত্রটি ভারতে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে, এছাড়াও ভারতের মাটিতে ইতিমধ্যে গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মফেস্টিভ্যালথেকে সম্মাননা লাভ করেছে। ‘মেঘের কপাট’ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক ওয়ালিদ আহমেদের সঙ্গে কথা বলেছেন সাজু আহমেদ-
‘মেঘের কপাট’ সিনেমার মূল্যায়ন...
প্রথম সিনেমার সব কিছুই নতুন এবং ভালোলাগার। সিনেমার দর্শকরা শিল্পীদের অভিনয়, গল্প, গান এবং বিশেষভাবে লোকেশন এর চিত্রায়ন খুব পছন্দ করেছে। যাদের জন্য সিনেমাটা বানিয়েছি, তারা কি বলছেসেটাই গুরুত্বপূর্ণ। দর্শকদের বিভিন্ন মতামত আমি শোনার চেষ্টা করেছি, যা আমার কাজের অনুপ্রেরণা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সিনেমাটি নিয়ে পজিটিভ রেসপন্স পাচ্ছি। তবুও ব্যক্তিগত ভাবে বলবো, আরও অনেক কিছু দেয়ার মত ছিল, যা হয়ত সামনে দেবার চেষ্টা করবো।
‘মেঘের কপাট’ ভারতে সম্মাননাও পেয়েছে, অনুভূতি...
ভারতে মুক্তি আমাদের সিনেমার জন্য এক নতুন অধ্যায়। আমরা সিনেমাটা বানানোর সময়ই সাবটাইটেল করেছিলাম। কারন আমরা চাইছিলাম পৃথিবীর অন্য ভাষার মানুষও সিনেমাটা দেখুক। এই মুক্তির মাধ্যমে ওপার বাংলার মানুষ সিনেমাট াদেখার সুযোগ পাবে এবং অন্য হিন্দি বা ভাষার কোন নাগরিক গেলেও তারা সাবটাইটেল থাকার ফলে বুঝতে পারবে।আর আরেকটি ভালো খবর হলো, ভারতের আমরা এবার সর্বমোট তিনটি পুরষ্কারপেয়েছি। ভারতের বিখ্যাত গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভালে মেঘের কপাট সেরা বিদেশি চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়। এছাড় াসেরা নির্মাতা হিসেবে আমাকে পুরস্কৃত করা হয়। এবং সবচেয়ে চমক ছিল ‘রাজ কাপূর’ আ্যাওয়ার্ড। বিদেশের মাটিতে নিজের চলচ্চিত্র নিয়ে এই অনন্য সম্মান হাতে দেয়ার সময়, তারা বারবার বাংলাদেশের নামটা উচ্চারণ করছিল। সেই অনুভূতিটা আমায় গর্বিত করেছে।
বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের বর্তমান অবস্থায়...
সিনেমা দিন দিন উন্নত হচ্ছে। গত দশ বছরে কি পরিমান উন্নত হয়েছে তা আজকের যে কোন একটা সিনেমার কাজ দেখলেই বোঝা যায়। তাই পজিটিভ দিক গুলো ভাবতে হবে। বিদেশি প্রডাকশন হাউজগুলো আমাদের সিনেমায় লগ্নি করতে আগ্রহী হচ্ছে। এছাড়া আমাদের সিনেমা দেশের গন্ডি পেড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ শুরু করেছে সম্প্রতি। তাই সিনেমার সুদিন ফিরে আসিবে বলে আমি আশাবাদী।
চলচ্চিত্রের সংকট নিরসনে করণীয়...
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিশ্বের যে কোন চলচ্চিত্র এখন আমাদের হাতে হাতে। তাই প্রতিযোগীতার বাজারটা আরও বড় হয়েছে। দর্শক বড় বাজেটের সিনেমাদেখে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। নিখুঁত নির্মাণ আর বিশ্বমানের সিনেমা না বানাতে পারলে, দর্শক আমাদের সিনেমা দেখবে না। তাই ভালো গল্পের সাথে গুনগত মান ধরে রেখে সিনেমা বানাতে পারলেই কেবল এই সংকট কাটানো যাবে। পাশাপাশি ভালো সিনেমা হলের পরিবেশ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
সিনেমা নিয়ে পরিকল্পনা...
২০২৪ এ আমার দুটি সিনেমা শুরু করার পরিকল্পনা আছে। ৩টি গল্প হাতে আছে। সময়, বাজেট এবং আর্টিস্টদের শিডিউল বিবেচনায় যে কোন একটা গল্প আগে শুরু করবো। নতুন সিনেমায় অবশ্যই আগের নির্মাণ থেকে তফাৎ থাকবে। ‘মেঘের কপাট’ এ গল্পের প্রয়োজনে এক রকম নির্মাণ ছিল। এবার যেহেতু ভিন্ন গল্প তাই নির্মাণ শৈলীও আলাদা করা হবে। নতুন সিনেমায় আরও নতুন প্রযুক্তির ছোঁয়া থাকবে পোস্ট প্রডাকশনে। সব কিছু ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই নতুন সিনেমার ঘোষণা দেবো।
নাটক ও গান নির্মাণের খবরাখবর...
গান আমার প্রাণ। আমার লেখা বহু গান স্বনামধন্য সব শিল্পীদের কন্ঠে আছে। তাই গান কখনো ছাড়তে পারবো না। সিনেমা নির্মানের ব্যস্ততায় নাটকের কাজে গতি কমেছে। তবে বিশেষ দিবস বা খুব ভালো গল্পপেলে নাটক নির্মাণ করবো আবার। আগামী বছরও বেশ কিছু গান আসবে। নাটক আসবে কিনা এখনো পরিকল্পনা করিনি। আপাতত সিনেমাতে মনযোগ দিচ্ছি।
নতুনদের প্রতি পরামর্শ...
চলচ্চিত্রের বাজার বড় হচ্ছে, তাই নতুনদের এগিয়ে আসার এখনই সময়। হাতে যা আছে তাই নিয়ে শুরু করে দিতে হবে। ছোটছোট করে কিছু কাজ করে, তারপর বড় কাজে হাত দিতে হবে। লেগে থাকলে নতুন নির্মাতারা অবশ্যই সফলতা পাবেন।
এবি/ এইচএন