অস্কারজয়ী তথ্যচিত্র ‘নো আদার ল্যান্ড’-এর ফিলিস্তিনি সহপরিচালক হামদান বল্লাল মুক্তি পেয়েছেন। বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণের শিকার হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাকে আটক করেছিল।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ওই তথ্যচিত্রের আরেক সহপরিচালক জুবাল আব্রাহাম লিখেছেন, ‘সারা রাত হাতকড়া পরিয়ে সামরিক ঘাঁটিতে মারধরের পর অবশেষে হামদান বল্লালকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজ বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে যাবেন।’
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, তাদের সাংবাদিকেরাও বল্লাল ও আরো দুই ফিলিস্তিনিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি কিরিয়াত আরবাতের পুলিশ স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেছেন।
এপি জানিয়েছে, বল্লালের মুখে আঘাতের চিহ্ন এবং পোশাকে রক্তের দাগ ছিল।
বল্লাল বলেন, আমাকে একটি সেনাঘাঁটিতে আটকে রাখা হয়েছিল এবং একটি বরফশীতল এসির নিচে ঘুমাতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি এপিকে আরো বলেন, ২৪ ঘণ্টা আমার চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। সারা রাত আমি ঠান্ডায় কাঁপছিলাম। একটি ঘরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না...আমাকে নিয়ে সেনাদের হাসাহাসি করতে শুনেছি।
হামদান বল্লালসহ ওই তিন ব্যক্তির আইনজীবী লিয়া সেমেল বলেন, আক্রমণের শিকার হওয়ার পর তাদের যৎসামান্য চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছিল। গ্রেপ্তারের পর কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ওই আইনজীবীকে তাদের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। তিনি এর আগে বলেছিলেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে এক তরুণ বসতি স্থাপনকারীর ওপর পাথর ছুড়ে মারার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বল্লাল এবং ‘নো আদার ল্যান্ড’ তথ্যচিত্রের অন্যান্য পরিচালক চলতি মাসের শুরুতে লস অ্যাঞ্জেলেসে ৯৭তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের মঞ্চে উঠেছিলেন। সেখানে সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে অস্কার জিতেছিল ছবিটি। ওই তথ্যচিত্রে ইসরায়েলি দখলদারির অধীন জীবনসংগ্রামের নানা দিক উঠে এসেছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় অধিকৃত পশ্চিম তীরের সুসিয়া গ্রামের মুসলিমরা যখন ইফতার করছিলেন, তখন প্রায় দুই ডজন বসতি স্থাপনকারী সেখানে হামলা চালায়। হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজন মুখোশ পরে ছিলেন। কারো হাতে বন্দুক ছিল। আবার কারো গায়ে সামরিক বাহিনীর পোশাক ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা এপিকে জানিয়েছেন, বসতি স্থাপনকারীরা যখন ফিলিস্তিনিদের দিকে অব্যাহত পাথর ছুড়ছিল, তখন সেখানে ইসরায়েলি সেনারা উপস্থিত হন এবং ফিলিস্তিনিদের দিকেই বন্দুক তাক করেন।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই হামলার জন্য জবাবদিহির আহ্বান জানিয়েছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ