বই বিতরণ নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, বই বিতরণ নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা বই বিতরণে নানাভাবে বাধা দিয়েছে। যারা এসব করেছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ সময় নতুন বছরের প্রথম দিনে দেশের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে না পারায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনটিসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ৪৪১টি বই মাত্র আড়াই মাসে আমরা পরিমার্জন করেছি। এর মধ্যে ছয় কোটি বই দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পৌঁছে গেছে। আরো চার কোটি বই বিভিন্ন স্থানে যেতে ট্রাকে ওঠার অপেক্ষায় আছে।
এনটিসিবি চেয়ারম্যান আরো বলেন, প্রাথমিক ও দশম শ্রেণির সব বই আগামী ৫ জানুয়ারি, মাধ্যমিকের আটটি বই ১০ জানুয়ারি এবং সব বই ২০ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানোর চেষ্টা করব।
এ বছর প্রায় ৪১ কোটি নতুন বই বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি। রিয়াজুল হাসান জানান, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৪৪১টি বই পরিমার্জন করা হয়েছে; যা অনলাইনে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে আজ থেকেই।
এর আগে বই উৎসবের নামে অর্থ অপচয় হয়েছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের বিনামূল্যের মূল পাঠ্যবইগুলোর মধ্যে ৬৯১টি বই নতুন করে পরিমার্জন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪১টি বইয়ের পরিমার্জন সম্পন্ন করে পিডিএফ ভার্সনে রূপান্তর করা সম্পন্ন হয়েছে।
২০২৩ সালে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। পরে চলতি ২০২৪ সালে প্রাথমিকের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি, ২০২৫ সালে প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম এবং মাধ্যমিকের দশম শ্রেণির নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় আসে। এই শিক্ষাক্রমের আলোকে ২০২৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদানের কথা ছিল। তবে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর থেকেই এ নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়। গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর আলোচিত-সমালোচিত এই পাঠ্যক্রমই স্থগিত করে দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ফিরে যাওয়া হয় পুরনো কারিকুলামেই।
পাঠ্যবইয়ে অতিরঞ্জিত ইতিহাসসহ বিভিন্ন পরিমার্জন আনা হচ্ছে এবারের শিক্ষাবর্ষে। কয়েকটি গল্প-কবিতা বাদ দিয়ে নতুন করে গল্প-কবিতা সংযোজন করা হচ্ছে। আর ইতিহাসনির্ভর বিষয়বস্তুতেও আনা হচ্ছে পরিবর্তন।
আমারবাঙলা/এমআরইউ