নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন যাবত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আসছেন। এরই প্রেক্ষিতে তারা বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছেন।
কিন্তু তাদের এসব দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় এবার কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতি।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তারা সকল জেলায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির জেলা কমিটির নেতৃত্বে সংবাদ সম্মেলন করবেন। আগামী ২ অক্টোবর সারা দেশে একদিনের কর্মবিরতি পালন করবেন তারা। এরপরও যদি তাদের দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হয় তাহলে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি শাহেদুল খবির চৌধুরী ও মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্লা স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টি হলেও শিক্ষা ক্যাডারকে বিশেষায়িত পেশা হিসেবে গড়ে তোলা হয়নি।
বঞ্চনা আর বৈষম্যের মাধ্যমে এ পেশার কার্যক্রমকে সংকুচিত করা হয়েছে। এ পেশাকে গ্রাস করছে অদক্ষ অপেশাদাররা যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনের পরিপন্থী। দেশের সার্বিক শিক্ষার উন্নয়নকল্পে শিক্ষা ক্যাডারের নানাবিধ সমস্যা ও যৌক্তিক দাবীগুলো পূরণের জন্য বারবার কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন থাকা সত্ত্বেও সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করে যোগ্য সকল কর্মকর্তার পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অর্জিত ছুটি সমস্যা আজও সমাধান হয়নি।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয় আমাদের দাবি পূরণে আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। পদ সৃজনের কাজ আটকে আছে ৯ বছর। পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মুহূর্তে শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন স্তরে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা আছে প্রায় ৭০০০ জন।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের অপসারণের দাবি জনিয়েছি কিন্তু সেটি করা হয়নি। উপরন্তু আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভুত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এটি সুস্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। আমরা এসকল কর্মকাণ্ডকে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামীল মনে করি।
এর আগে তারা তাদের দাবি পূরণে মন্ত্রণালয়কে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের দাবি পূরণে তেমন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এক্ষেত্রে সারাদেশের সরকারি কলেজ, সরকারি মাদ্রাসাসহ সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
এবি/এইচএন