প্রথমে মহাখালীর রেল ক্রসিংয়ে অবরোধ করে আন্তঃনগরীর দুটি ট্রেন থামানো হলো। এরপর ছুড়ে মারা হলো ঢিল। এতে দুই ট্রেনের ভেতরে থাকা শিশুসহ আরও বেশ কিছু যাত্রী রক্তাক্ত হলেন।
১৮ নভেম্বর (সোমবার) সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আন্দোলন করছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। ট্রেনে ঢিল মারার অভিযোগটি উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
আজ বেলা ১১টার পর থেকে মহাখালীর রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে মহাখালী রেল ক্রসিং অবরোধ করেন তারা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খল আন্দোলনের কারণে মহাখালী রেল ক্রসিং এলাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় ঘটতে পারত। এতে শত শত শিক্ষার্থীসহ অনেক সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বিধিনিষেধ না মেনে রেললাইনের ওপর হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে যান এবং আন্দোলন করতে থাকেন। এ সময় রেললাইন দিয়ে আসা দুই আন্তঃনগর ট্রেন তড়িঘড়ি করে থামাতে বাধ্য হন চালকরা। চালকরা যদি সতর্কতার সঙ্গে ট্রেন না থামাতেন তাহলে মহাখালীতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
এ বিষয়ে বনানীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল বলেন, মহাখালী রেল ক্রসিংয়ের বর্তমান অবস্থা ভয়াবহ। ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা রেল ক্রসিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছেন। তারা ট্রেন থামিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। এ ছাড়া তাদের আন্দোলনের কারণে মহাখালী, বনানী ও জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদিন বলেন, ঘটনাটি আমরা জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে রেলওয়ে পুলিশে একাধিক টিম যাচ্ছে।
এদিকে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মহাখালী এলাকায় লাইনে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন আটকা পড়ে। সেগুলো হলো জামালপুরের তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী বনলতা এক্সপ্রেস।
কন্ট্রোল রুম থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে– নোয়াখালী থেকে আসা ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের হামলায় ট্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন ট্রেনে থাকা যাত্রীরা। এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকায় আসার পথে উপকূল এক্সপ্রেসে আন্দোলনকারীরা হামলা চালিয়ে জানালার কাচ ভেঙে ফেলেছেন। পরে ট্রেনটি পুলিশ পাহারায় সেখান থেকে ঢাকা স্টেশনে আনা হয়েছে।
রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, উপকূল এক্সপ্রেসে হামলার ঘটনায় কয়েকজন আহত আছেন। এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যাটা বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করে রেখেছেন। আপাতত ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে।
.
আমার বাঙলা/এসএইচ