নজরুল ইসলাম, ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সনদ, নম্বরপত্র ও টান্সক্রিপ্ট উত্তোলনে দিনের পর দিন টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হতো শিক্ষার্থীদের। হজম করতে হতো কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাজে ব্যবহার।
আবেদন ও সত্যায়নের জন্য ব্যাংক, বিভাগ ও আবাসিক হলে বিভিন্ন দফতর ঘুরতে হতো শিক্ষার্থীদের। মাসের পর মাস কেটে যেত প্রতীক্ষায়, তবুও মিলতো না সনদ।
এবার দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে অনলাইনভিত্তিক প্রিন্ট সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের সেবা কার্যক্রম চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে এ সেবার উদ্ধোধন করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসন হবে বলে দাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট, নম্বরপত্র এনালগ বা হাতে লিখে দেয়া হতো। তবে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নতুন ফরম্যাটে দেয়া হবে। নির্দিষ্ট সফটওয়্যারে অটোমেশনের মাধ্যমে কাগজপত্রগুলো তৈরি করা হবে।
এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট সার্ভারে শিক্ষার্থীদের রোল সাবমিট করলেই মুহুর্তেই স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় কাগজপত্রগুলো প্রস্তুত হবে। পরবর্তীতে প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করা হবে।
এছাড়া পরবর্তীতে নম্বরপত্র ও ফল প্রকাশের তারিখের সনদ একই পদ্ধতিতে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা আবেদনের পর এক সপ্তাহের মধ্যেই কাগজপত্র হাতে পাবে বলে প্রত্যাশা দফতরটির দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের।
ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কামরুজ্জামান, জেবুন নাহার নাসরিন, পিন্টু লাল দত্ত, আবু তালিশ, সহকারী রেজিস্ট্রার ড. আব্দুল আজিজ কানন, শাখা কর্মকর্তা কাজী আতাউল হক ও ইবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মুনজুরুল ইসলাম নাহিদসহ দফতরটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে এ প্রক্রিয়ায় সনদ হাতে পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরাও।
সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট হাতে পেয়ে ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহান শাহরিয়ার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাগজপত্রের জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে ঘুরতে হয়েছে।
আজ সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট এত সহজে হাতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হবে।
প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ সেবা চালু হলো। এ পর্যন্ত ১০টি বিভাগের ফল প্রকাশিত হয়েছে। আমরা তাদের সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন করেছি। কারণ এগুলো সবক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বাকি কাজগপত্রগুলোও অতি দ্রুত তৈরি করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে আমাদের উপযুক্ত ল্যাব, আর্থিক ও লজিস্টিক সাপোর্ট প্রয়োজন। আমাদের কিছু মেশিন আছে কিন্তু রাখার ও পরিচালনার পরিবেশ নেই। যার জন্যে ময়লা ঢুকে অনেক যন্ত্রপাতি বারবার নষ্ট হয়।
এর আগে অগ্রণী ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ই-পেমেন্ট সেবা সেবা চালু করা হয়েছিল। ই-পেমেন্ট পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, পুনঃভর্তি, একাডেমিক, হল, পরিবহন ও কাগজপত্র উত্তোলনসহ সকল ধরনের ফি অনলাইনে জমা দিতে পারে শিক্ষার্থীরা।
এবি/এইচএন