রাজধানীর লালমাটিয়ায় দুই তরুণীর প্রকাশ্যে ধূমপান নিয়ে বয়স্ক এক ব্যক্তির আপত্তি থেকে বাকবিতণ্ডার সূত্রপাত। পরে এ নিয়ে থানা-পুলিশও হয়েছে।
শনিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় কথা কাটাকাটি থেকে মুহূর্তেই তৈরি হওয়া ৪০-৫০ জনের একটি মব থেকে পরে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই দুই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে মোহাম্মদপুর থানায় প্রায় চার ঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের দেন-দরবারে আপসের পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুই তরুণীকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ধানমন্ডির বাসিন্দা ওই দুই তরুণী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা ঘটনার বিষয়ে বলেন, ধূমপান করা নিয়ে বয়স্ক এক ব্যক্তির সঙ্গে বাকবিতণ্ডার মধ্যে এক তরুণী ওই ব্যক্তির দিকে চা ছুড়ে মারলে ঝামেলা বেঁধে যায়। একপর্যায়ে দুইজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে, অন্য আরো কয়েকজন মিলে তাদেরকে ধরে ফেলেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
লালমাটিয়ায় আড়ংয়ের পাশের একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন খবর পেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করা মোহাম্মদপুর থানার এসআই কাদের আহমেদ।
তিনি বলেন, চায়ের দোকানে বসে ওই দুই তরুণী চা ও সিগারেট খাচ্ছিলেন। তখন পাশ দিয়ে যাওয়া একজন বয়স্ক ব্যক্তি তাদের সিগারেট খাওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তাদেরকে চলে যেতে বলেন। দোকানিকেও দোকান বন্ধ করতে বলেন। এ নিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তরুণীদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তির গায়ে চা ছুঁড়ে মারেন একজন। তাদের দাবি, ওই ব্যক্তি অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করায় তার উপর চা ছুঁড়ে মারা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এসআই বলেন, পরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আরো কয়েকজন জড়ো হলে দুই তরুণী চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তখন আরো অনেক মানুষ জড়ো হয়ে তাদেরকে ধরে ফেলেন। কেউ তাদেরকে মারতে চাইছিল, আবার কেউ তাদেরকে সেফ করতে চাইছিল।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৪০-৫০ জনের একটা মব তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পরে পরিস্থিতি বুঝে আমি থানায় খবর দিয়ে মহিলা ফোর্স নিয়ে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। খবর পেয়ে তাদের বাবা-মাও থানায় আসেন।
এসআই কাদের বলেন, এরপর বিষয়টি নিয়ে থানায় বসে দীর্ঘক্ষণ দুই পক্ষের আলোচনা হয়। দুইপক্ষই স্বীকার করে তাদের ভুল ছিল। এরপর তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে মর্মে একটা আপসনামায় স্বাক্ষর করার পর পরিবারের জিম্মায় দুই তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ