নোয়াখালী প্রতিনিধি: মেঘনা নদীতে মাছ ধরার খেপ দখলকে কেন্দ্র করে জলদস্যুদের গুলিতে ২ জেলে নিহত হয়েছেন। এ সময় জলদস্যুদের গুলিতে ৮ জন আহত হন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আব্দুর রহমান (৪০) নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের নাছির আহমদের ছেলে ও একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ ইসমাইল (৪২)।
আহতরা হলেন- জিল্লুর রহমান (৩২) ও নুর আলম মিয়া (৩৫)। এদের মধ্যে জিল্লুর নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের ভুলু মাঝির ছেলে ও মিয়া একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতরাব আলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।
অপহৃত জেলেরা হলেন- রাজু (১৩), জুয়েল (২৬), আব্দুর রহমান (২২), হোসেন (৪০), ইসমাইল (৪০)।
আহতদের একই দিন রাত ১১ টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে ঘটনাস্থল থেকে ৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মানস বিশ্বাস ২ জেলে নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গতকাল রাত ১২ টার দিকে সন্দ্বীপ কোস্টগার্ডের সদস্যরা ২ জেলের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসে। ওই সময় আহত ২/৩ জনকে জেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিহত ২ জেলের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।
ভুক্তভোগী জেলেরা অভিযোগ করেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দীপ অংশ থেকে দীর্ঘ দিন থেকে মাছ শিকার আসছে। কিছু দিন আগে থেকে মেঘনা নদীর মাছ শিকারের এই খেপ দখলের চেষ্টা চালায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী।
বুধবার বিকেলের দিকে কেফায়েত বাহিনী ওই খেপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে দুটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সেখানে যায় ভুক্তভোগী জেলেরা।
এক পর্যায়ে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর সদস্য আলতাফ, নুরউদ্দিন ও জুয়েল সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মহিউদ্দিনের সহযোগিতায় জেলেদের দুটি মাছ ধরার ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
এক পর্যায়ে জলদস্যু বাহিনী গুলি ছুড়লে ২ জেলে গুলিবিদ্ধসহ ৫ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই সময় জলদস্যু বাহিনী ৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। নিহত ২ জেলেকে কোস্টগার্ড জলদস্যু সাজানোর পায়তারা করছে।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কেফায়েত উল্যার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. মহিউদ্দিনের মুঠোফোনে কল করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ফোন রিসিভ করেন সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্টের আরেক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
তিনি তার পরিচয় দিয়ে বলেন, এসব অভিযোগের বিষয়ে তাদের জানা নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন এখনো অফিসে আসে নাই। চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির বলেন, মেঘনা নদীতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।
এবি/এইচএন