ছবি-সংগৃহীত
অপরাধ

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৎপর হচ্ছে আন্ডারওয়ার্ল্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড আবার অশান্ত হয়ে উঠেছে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই আন্ডারওয়ার্ল্ড সক্রিয় হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে হতে পারে নির্বাচন। এ অবস্থায় নির্বাচনের আগে কারাগারে বসেই ঢাকাকে অশান্ত করার চেষ্টায় আন্ডারওয়ার্ল্ড।

দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে নতুন গ্রæপ তৈরির চেষ্টা করছে কেউ কেউ। নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে এই আন্ডারওয়ার্ল্ড এর সক্রিয় তৎপরতা সবসময় বাড়ে। এবারেও তার ব্যতিক্রম নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একাধিক গোপন সূত্র বলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফায়দা লুটতে পেশাদার অপরাধী বা অবৈধ অস্ত্রের চক্রগুলো নড়াচড়া শুরু করেছে। সীমান্তের অরক্ষিত কিছু এলাকাসহ (কক্সবাজার-বান্দরবান) বিভিন্ন কৌশলে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশ করানো হচ্ছে।

দুবাইয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত মোস্ট ওয়ান্টেড শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ওরফে মন্টি ওরফে হাজি সাহেব সারা দেশেই তার সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জাল ছড়িয়ে রেখেছেন। বিশাল বাহিনীর গডফাদার জিসান সরাসরি কোনো রাজনৈতিক পার্টিকে সমর্থন করেন না। তার অনুসারীদের দাবি, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকবে তিনি সে সরকারেরই লোক।

বিগত সময়ে রাজধানীতে সন্ত্রাসী কায়দায় যেসব হত্যাকাÐ- হয়েছে তার সিংহভাগই জিসানের কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ে হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, জিসানের জন্ম কুমিল্লায় হলেও বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়। রাজধানীর রামপুরা টিভি স্টেশনের পেছনে ৩৩৩ পশ্চিম রামপুরার দোতলা বাড়িতে বসবাস করতেন তিনি। তার মা মগবাজারের একটি স্কুলের শিক্ষিকা।

১৯৯৬ সালের দিকে রামপুরায় গার্মেন্টেসের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে জিসান আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে মিশে যান এবং এলাকার সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেন। সময়ের সাথে সাথে তার বুদ্ধি ও দক্ষতার কারণে হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী।

এমনই আর এক শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ২৬ বছর জেল খেটে কিছু দিন আগে মামুন জামিনে মুক্তি পায়। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর থেকেই মামুনকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল কারাবন্দি আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। এক সূত্র থেকে জানা গেছে, কিলিং মিশন ব্যর্থ হলেও দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর আবারও প্রকাশ্য বিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এ ঘটনার মধ্য দিয়ে। এ ঘটনায় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রাজধানীতে আধিপত্য ধরে রাখতে রাজনৈতিক দলগুলো বেশ তৎপর। প্রায়ই ঘটছে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা। এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করা হচ্ছে-বিশেষ করে রাজধানীর চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হচ্ছে মিছিল-মিটিংয়ে। তাদের জন্য স্থানীয় নেতাদের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টাও করছে। চিহ্নিত এসব সন্ত্রাসীর গতিবিধি নজরদারি করছেন গোয়েন্দারা।

রাজধানীর বাড্ডা, খিলগাঁও, শাজাহানপুর, মতিঝিল, গুলশান, সবুজবাগ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আদাবর, তেজগাঁও, মহাখালী ও পল্লবী এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দাপট বেড়ে গেছে। আবার বিদেশে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও দেশে ফেরার চেষ্টা করছে। এদের মধ্যে মিরপুরের শাহাদত, রামপুরার জিসান, পল্লবীর মোক্তার, বাড্ডার মেহেদি, গুলশানের সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মোহাম্মদপুরে কালা মনির ও শাজাহানপুরের ফ্রিডম মানিক দেশের দাগী চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রæপগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে।

বিদেশ থেকে তারা মোবাইল ফোনে এসব সন্ত্রাসীর সঙ্গে কথোপকথন চালাচ্ছে। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, দেড় যুগ ধরে আমেরিকায় অবস্থানকারী মেহেদী গুলশান, মহাখালী, বাড্ডা ও ভাটারা এলাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। পুলিশের গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাড্ডা ও গুলশান এলাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণে নিতে মেহেদি ও যুক্তরাষ্ট্রে আত্মগোপনকারী অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল এক হয়ে গেছে। স¤প্রতি রাজধানীর গুলশান-১ এর গুলশান শপিং কমপ্লেক্সকে ঘিরে চঞ্চল-মেহেদী গ্রæপের ক্যাডার বাহিনী প্রকাশ্যে মহড়া দিয়েছে। এই গ্রæপের সেকেন্ড ইন কমান্ড দুলাল, দীপু, বাবুল, অলি, মানিক, মান্নান, সাঈদ, রিয়াদ, রুবেল ও তপন সক্রিয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, জামিনে বের হয়ে কিংবা কারাগারে বসে কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবে না। ডিবির প্রতিটি টিম প্রতিটি এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো অরাজকতা করছে কী না, চাঁদাবাজি করছে কী না, মানুষকে হুমকি দিচ্ছে কী না- সেটা আমাদের ডিবি টিম তদন্ত করছে।

পুলিশের তথ্যানুযায়ী, পলাতক ১৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নিয়ন্ত্রণে আছে অপরাধজগৎ। তাদের ধরতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল ‘রেড নোটিস’ জারি করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহযোগীদের মাধ্যমে বিদেশ থেকে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে তারা।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

প্রধান উপদেষ্টার কাছে রোড ম্যাপ চেয়েছি

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনী রোড ম্যাপ...

ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করা উচিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা ক...

আয়নাঘর-ভাতের হোটেল থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিবিতে থাকবে না আয়নাঘর। থাকবে না কোনো ভাত...

পূজায় নিরাপত্তায় থাকবে ২ লাখ আনসার

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশে...

ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৫ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্ট...

উপস্থানায় আসছেন অপু বিশ্বাস

বিনোদন ডেস্ক : ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস...

বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্র নিহত 

জেলা প্রতিনিধি : বগুড়ায় ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে দুই স্কুলছা...

সচিব আবুল কালাম আজাদ গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচি...

ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৫ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্ট...

একদিনে ৩১ লাখ টাকা জরিমানা 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে একদিনে প্র...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা