বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকাসহ সারা দেশে শুরু হওয়া গণআন্দোলনে ছাত্র ছাড়াও যোগ দেন নানা পেশার মানুষ। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। গত ৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরায় জসীমউদ্দীন রোডে আন্দোলনে যোগ দেন আমির হোসেন নামের এক গাড়ি চালক। তিনিও গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।
সরকার পতনের পর নিহত আমির হোসেনের বাবা খোরশেদ আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ৭০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে উত্তরা পশ্চিম থানায় হত্যা মামলাটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার এজাহারে ১২শ থেকে ৩শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। তবে আদালতের মামলার এজাহারে ২শ থেকে ৩শ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করা হয়। দুটি এজাহারেই অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যায় ভিন্নতা দেখা যায়।
এজাহারে উল্লেখ্য করা আসামিদের বেশিরভাগের ঠিকানা ঢাকার বাহিরে, অর্থাৎ মামলার বাদীর স্থায়ী ঠিকানার সঙ্গে সকল আসামির ঠিকানা মিল পাওয়া যায়। অথচ আন্দোলন হয় উত্তরাতে কিন্তু উত্তরায় বসবাসরত কারও নাম এজাহারে নেই। এক সময় আদালত থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয় এরপর ঘটনা মোড় নেয় ভিন্নদিকে, মামলায় নাম না থাকার পরও অজ্ঞাত নামা এক অসুস্থ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় বলে গ্রেফতারকৃত পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। অভিযোগ করে আরও বলা হয়, তুরাগের বাউনিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা আহমেদ আলী নামে এক ব্যক্তিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দেওয়া হয়। যিনি কি-না আন্দোলনের সময় বাসার বাহিরেও যাননি।
গ্রেফতারকৃত আহমেদ আলীর পরিবার থেকে আরও জানানো হয়, ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় বাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে কিন্তু আসামি আদালতে পাঠানোর সময় উল্লেখ করা হয়, পরেরদিন ১০ তারিখ ভোরে তাকে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এবং তার নামে বলা হয়, তিনি নিজে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন- তিনি আন্দোলনে ছিলেন। সেইসঙ্গে গ্রেফতারকৃত আহমেদ আলীর বড় ছেলে সাদমান রহমান সৈকত মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যার নামে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা নেই।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী অফিসার উত্তরা পশ্চিম থানা উপপুলিশ পরিদর্শক মো. মাসুদ রানা জানান, তদন্ত করে আমরা আসামিদের গ্রেফতার করছি, তারপরও প্রয়োজন হলে আমরা আবারও পুনরায় তদন্ত করব। এ বিষয়ে কথা বলতে মামলার বাদি খোরশেদ আলমকে মামলায় উল্লেখ করা তার নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
.
আমার বাঙলা/এসএইচ