আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। তাকে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র। জাতীয় নেতা হলেও তার প্রভাব-প্রতিপত্তি সবচেয়ে বেশি ছিল ঝালকাঠিতে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছিল এ জেলায়, যারা আমুর হয়ে জেলার সব ধরনের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ–বাণিজ্য, কমিটি গঠন, নির্বাচনী মনোনয়ন বিক্রি করত। এই চক্রের মাধ্যমে আমু হয়ে উঠেছিলেন ঝালকাঠির গডফাদার।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। এরপর আমুর ঝালকাঠির বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে ওই বাড়ি থেকে পোড়া-অক্ষত মিলিয়ে প্রায় চার কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এর আগেই আমু পালিয়ে যান। এর পর থেকে আমুর অবস্থান কেউ জানতেন না।
গত ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশনায় তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়। আমির হোসেন আমু ১৯৪০ সালের ১ জানুয়ারি তদানীন্তন বরিশাল ঝালকাঠি মহকুমায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৩ সালে মন্ত্রী পরিষদের রদবদলে তিনি ভূমি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।