মো. নাজির হোসেন : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। আহতদের ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন, হারুন অর রশিদ (৩৫), রনি (৩৪), আক্তার (৪০), মুক্তার (৪২), আনন্দ (২৫), হাসিব (২২) শাহিনূর বেগম (৫৫), শাহ পরান গ্রুপের রিয়াদ হোসেন (২৪), আক্তার হোসেন (৪০)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হোসেন্দী ইউনিয়নে শাহ পরান গ্রুপের সাথে প্রতিপক্ষ হারুন অর রশিদ গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শাহ পরান মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর পক্ষে অবস্থান নেন অন্যদিকে হারুন অর রশিদ গ্রুপের লোকজন অবস্থান নেন আমিরুল ইসলামের পক্ষে। নির্বাচনে আমিরুল ইসলাম পরাজিত এবং মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ জয়লাভ করায় চাপে ছিল হারুন গ্রুপের লোকজন। এর মধ্যে রোববার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে সোমবার (২৪জুন) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে গোয়ালগাঁও গ্রামের দিলা মিয়ার মুদি দোকানের সামনে সংঘর্ষে জড়ায় উভয় পক্ষ। এতে হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি হারুন অর রশিদসহ তার সমর্থক রনি (৩৪), আক্তার (৪০), মুক্তার (৪২), আনন্দ(২৫), হাসিব (২২) গুলিবিদ্ধ হয়। হামলার খবর পেয়ে হারুনের চাচী শাহিনূর আক্তার এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। অন্যদিকে শাহ পরান গ্রুপের রিয়াদ ও আক্তার হোসেন নামে দুই জন আহত হয়।
পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আহতদের মধ্যে ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং দুজনকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হামলায় আহত হোসেন্দী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, রোববার আমরা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম এটা কি আমাদের অপরাধ? এই ঘটনার জের ধরে শাহ পরানের নেতৃত্বে অন্তত ২৫/২৬ জন আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। তাদের সবার হাতে পিস্তলসহ বিভিন্ন রকম অস্ত্র ছিল। তারা আমাদের লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকে। আতঙ্কিত হয়ে আমরা এদিক ওদিক ছোটাছড়ি শুরু করলে আমাদের ছয়জনের গায়ে গুলি লাগে’।
বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত শাহপরান বলেন,' তারা মিথ্যাচার করছে। ঘটনার সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না, আমি এখনো এলাকার বাহিরে আপনারা চাইলে আমার সাথে দেখা করে যেতে পারেন। শুনেছি এলাকায় টুকটাক গ্যাঞ্জাম হয়েছে। আমাদের কয়েকজন নেতা কর্মীর সামান্য আহত হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, ' নির্বাচনের পর বিভিন্ন এলাকায় আমার নেতা কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। আজকেও আমার একনিষ্ঠ কর্মী হারুন ও তার পরিবারের সদস্যের উপর হামলার ঘটনা ঘটলো। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজিব খান বলেন, খবর পাওয়ার পর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে কিনা আপাতত বলতে পারছি না। বিস্তারিত পরে বলা যাবে'।
এবি/এইচএন